নারীরা জন্মগতভাবেই শ্রবণশক্তিতে পুরুষদের তুলনায় এগিয়ে। সম্প্রতি প্রকাশিত এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে। ‘সায়েন্টিফিক রিপোর্টস’ জার্নালে প্রকাশিত গবেষণাটিতে বলা হয়েছে, বয়স, স্থান ও আবাসন নির্বিশেষে নারীদের শ্রবণক্ষমতা সাধারণত পুরুষদের তুলনায় বেশি সক্রিয় ও সংবেদনশীল। গবেষকরা মনে করেন, নারী-পুরুষের এই জৈবিক পার্থক্য বিবর্তনের একটি স্বাভাবিক ফল।
গবেষণায় পাঁচটি দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে প্রায় ৪৫০ জন সুস্থ, প্রাপ্তবয়স্ক নারী ও পুরুষ অংশ নেন। গবেষকরা লক্ষ্য করেন, প্রায় সব ক্ষেত্রেই নারীরা পুরুষদের তুলনায় ভালো শুনতে পারেন। যে কোনো মাত্রার (ডেসিবেল) শব্দ নারীদের কর্ণকুহরে দ্রুত প্রবেশ করে এবং তারা তুলনামূলকভাবে স্পষ্টভাবে শব্দ গ্রহণ করতে সক্ষম হন।
গবেষণায় আরও দেখা গেছে, নারীদের কানের অভ্যন্তরীণ গঠন পুরুষদের তুলনায় কিছুটা ভিন্ন। বিশেষত, কানের ভেতরের ‘ককলিয়া’ (Cochlea) নারীদের ক্ষেত্রে শব্দ গ্রহণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণে বেশি কার্যকর ভূমিকা পালন করে। এছাড়া, হরমোনজনিত পার্থক্যও নারীদের শ্রবণশক্তিকে প্রভাবিত করে।
বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে মানুষের শ্রবণশক্তি হ্রাস পায়। তবে গবেষণায় দেখা গেছে, সমবয়সী নারী ও পুরুষের মধ্যে নারীরা তুলনামূলকভাবে ভালো শুনতে পান। এছাড়া, পারিপার্শ্বিক অবস্থাও শ্রবণশক্তির ওপর প্রভাব ফেলে।
উদাহরণস্বরূপ, পার্বত্য অঞ্চলে বা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে উচ্চতায় অক্সিজেনের স্বল্পতা থাকার কারণে শ্রবণশক্তি কিছুটা কমতে পারে। তবে সমতল অঞ্চলে এই সমস্যার তেমন প্রভাব পড়ে না।
গবেষণার ফলাফল নির্দেশ করে যে, নারীদের শ্রবণক্ষমতা স্বাভাবিকভাবেই পুরুষদের তুলনায় বেশি সংবেদনশীল ও কার্যকর। এটি নারী-পুরুষের স্বতন্ত্র জৈবিক বৈশিষ্ট্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক, যা দীর্ঘ বিবর্তন প্রক্রিয়ার অংশ বলে মনে করা হয়।
মন্তব্য করুন