ব্যস্ত জীবনে সময় বাঁচাতে অনেকেই রান্না করা খাবার ফ্রিজে রেখে পরে তা গরম করে খান। যদিও এটি সাধারণ অভ্যাস, তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন—কিছু নির্দিষ্ট খাবার দ্বিতীয়বার গরম করলে তা শরীরের জন্য ক্ষতিকর হয়ে উঠতে পারে। এমনকি কিছু ক্ষেত্রে এগুলো বিষক্রিয়ার মতো প্রতিক্রিয়া তৈরি করতে পারে। নিচে এমন কিছু পরিচিত খাবারের কথা তুলে ধরা হলো, যেগুলো পুনরায় গরম করে খাওয়া উচিত নয়।
ভাত হচ্ছে এ তালিকার অন্যতম। রান্না করার পর যদি ভাত দীর্ঘ সময় স্বাভাবিক তাপমাত্রায় রাখা হয়, তাহলে তাতে ব্যাসিলাস সেরিয়াস নামক ব্যাকটেরিয়া জন্ম নিতে পারে। পুনরায় গরম করার সময় এই ব্যাকটেরিয়া সক্রিয় হয়ে উঠে বিষাক্ত হয়ে যেতে পারে। এতে বমি, পেট ব্যথা কিংবা ডায়রিয়ার মতো উপসর্গ দেখা দিতে পারে।
মাংস বারবার গরম করলে তাতে থাকা প্রোটিনের গঠন ভেঙে যায় এবং এতে পুষ্টিগুণ কমে যায়। সেই সঙ্গে স্বাদ ও গন্ধও নষ্ট হয়ে যায়। এর ফলে হজমে সমস্যা হতে পারে এবং পেটের নানা ধরণের অস্বস্তিও দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে গরু বা খাসির মাংস বারবার গরম না করাই ভালো।
ডিম, বিশেষ করে সিদ্ধ বা ভাজা অবস্থায় দ্বিতীয়বার গরম করলে তাতে বিষাক্ত উপাদান (toxins) তৈরি হতে পারে। এগুলো খেলে হজমের সমস্যা, অম্বল এবং গ্যাস্ট্রিকের মতো সমস্যা হতে পারে। তাপ প্রয়োগে ডিমে থাকা প্রোটিন রূপান্তরিত হয়ে শরীরের ক্ষতি করতে পারে।
আলুও একটি সংবেদনশীল খাবার। রান্নার পর ঠান্ডা হলে এতে ক্লোস্ট্রিডিয়াম বটুলিনাম নামক বিপজ্জনক ব্যাকটেরিয়া জন্মাতে পারে। পরে গরম করলেও এই ব্যাকটেরিয়া সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস না-ও হতে পারে, যা ফুড পয়জনিংয়ের ঝুঁকি বাড়ায়।
পালং শাকে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন ও নাইট্রেট। তবে পুনরায় গরম করলে নাইট্রেট রূপ নেয় নাইট্রাইটে, যা শরীরে কার্সিনোজেনিক উপাদানে পরিণত হতে পারে। এর ফলে দীর্ঘমেয়াদে ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়তে পারে।
অনেকেই চা তৈরি করে রেখে দেন এবং পরে আবার তা গরম করে খান। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গরম করা চা লিভারের ক্ষতি করতে পারে। চায়ের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট গুণাবলি দ্বিতীয়বার তাপ প্রয়োগে নষ্ট হয়ে যায়, যা শরীরের জন্য উপকারী হওয়ার বদলে ক্ষতিকর হয়ে উঠতে পারে।
রান্না করা খাবার ৪ ঘণ্টার মধ্যে খেয়ে ফেলা নিরাপদ। বারবার গরম না করে একবারেই যথাযথভাবে গরম করা উচিত। খাবার গরম করার সময় নিশ্চিত হতে হবে যেন তাপ খাবারের গভীরে পৌঁছায়। যেসব খাবার গরম করলে ঝুঁকি তৈরি হয়, সেগুলো সতর্কতার সঙ্গে খাওয়া উচিত।
মন্তব্য করুন