ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে অবস্থিত ফারাক্কা বাঁধের নির্মাণ কাজ শেষ হয় ১৯৭৫ সালে। এর মূল উদ্দেশ্য ছিল কলকাতা বন্দরের নাব্যতা রক্ষা এবং শুষ্ক মৌসুমে গঙ্গার পানি প্রবাহ নিশ্চিত করা। কিন্তু পাঁচ দশক পরও এই বাঁধ নিয়ে বিতর্কের শেষ নেই।
১৯৯৬ সালে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে ৩০ বছর মেয়াদি গঙ্গা জল বণ্টন চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এই চুক্তির মেয়াদ প্রায় শেষের দিকে, এবং নবায়ন নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। তবে ফারাক্কা নিয়ে উভয় দেশেই অসন্তোষ রয়ে গেছে।
বাংলাদেশের দাবি, ফারাক্কার কারণে পদ্মা নদীর পানির প্রবাহ কমে যাওয়ায় নদীভাঙন, কৃষিজমির লবণাক্ততা বৃদ্ধি এবং মৎস্য সম্পদ হ্রাস পেয়েছে। এতে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের লাখো মানুষের জীবন-জীবিকা হুমকির মুখে।
ফারাক্কা শুধু বাংলাদেশের জন্যই সমস্যা নয়, ভারতের কিছু রাজ্যও এর বিরুদ্ধে সরব। বিহার সরকার অভিযোগ করেছে যে ফারাক্কার কারণে তাদের রাজ্যে বন্যার তীব্রতা বেড়েছে। পশ্চিমবঙ্গেও নদীভাঙন ও পানির অসম বণ্টন নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
ফারাক্কা বাঁধের মূল লক্ষ্য ছিল কলকাতা বন্দরের নাব্যতা রক্ষা করা। কিন্তু অনেক বিশেষজ্ঞের মতে, এটি আশানুরূপ সফল হয়নি। ফলে হলদিয়ায় একটি নতুন বন্দর তৈরি করতে হয়েছে।
ফারাক্কা বাঁধের কার্যকারিতা ও পরিবেশগত প্রভাব নিয়ে প্রশ্ন বাড়ছে। ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে নতুন করে আলোচনা জরুরি হয়ে পড়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, টেকসই সমাধানের জন্য আধুনিক প্রযুক্তি ও যৌথ ব্যবস্থাপনা প্রয়োজন।
ফারাক্কা বাঁধের ৫০ বছর পূর্তিতে বিবিসি বাংলার প্রতিবেদনে উঠে এসেছে স্থানীয় জনগোষ্ঠী, বিশেষজ্ঞ ও নীতিনির্ধারকদের মতামত। এই প্রকল্পের ইতিহাস, বর্তমান সংকট ও সম্ভাব্য ভবিষ্যৎ নিয়েই চলছে তর্ক-বিতর্ক।
মন্তব্য করুন