গরমের দিনে শরীর ও ত্বকে নানা ধরণের সমস্যা দেখা দেয়। আর এই সমস্যাগুলোর সমাধানে ঘরোয়া এক উপাদান হতে পারে অসাধারণ কার্যকর—ফিটকিরি। অনেকের বাড়ির রান্নাঘর বা বাথরুমের কোণে থাকা এই সাদা পাথরটি আদিকাল থেকেই পরিচিত পানি বিশুদ্ধকরণকারী উপাদান হিসেবে। তবে, শুধু পানি পরিশোধনেই নয়, গরমকালে ফিটকিরির রয়েছে নানা কার্যকর ব্যবহার।
গ্রীষ্মকালে অতিরিক্ত ঘামের ফলে শরীরে দুর্গন্ধ দেখা দেয়, যা অস্বস্তিকর হয়ে উঠতে পারে। ফিটকিরির অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য ঘামের দুর্গন্ধ দূর করতে সাহায্য করে। গোসলের পানিতে ফিটকিরি মিশিয়ে বা ফিটকিরি পানি দিয়ে শরীর মুছে নিলে তা রিফ্রেশ অনুভূতি দেয়।
রোদে বের হলে মুখে ট্যান পড়ে এবং ত্বকের আসল উজ্জ্বলতা হারিয়ে যায়। ফিটকিরি ত্বকের উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করে। সামান্য পরিমাণ ফিটকিরি গুঁড়ো করে গোলাপজলের সঙ্গে মিশিয়ে মুখে ব্যবহার করলে কালচে ভাব কমে এবং ত্বক সতেজ দেখায়।
প্রচণ্ড গরমে দাঁত ও মাড়ির চারপাশে জীবাণু জমে বিভিন্ন সমস্যা তৈরি করে। ফিটকিরির গুণাগুণ মাড়ির ব্যথা ও মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে সাহায্য করে। ফিটকিরি মিশ্রিত গরম পানি দিয়ে কুলি করলে মুখ পরিষ্কার থাকে এবং ব্যাকটেরিয়া দূর হয়।
গরমকালে অনেকেই মূত্রনালির সংক্রমণে ভোগেন। ফিটকিরির অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল উপাদান এই সংক্রমণ প্রতিরোধে সহায়ক। প্রতিদিন ফিটকিরি মেশানো হালকা গরম পানি দিয়ে পরিষ্কার করলে ইউরিন ইনফেকশন অনেকটাই কমে যায়।
এই ঋতুতে ত্বক অতিরিক্ত তেলতেলে হয়ে ওঠে, যা ব্রণের কারণও হতে পারে। ফিটকিরি ত্বকের অতিরিক্ত তেল শোষণ করে এবং ত্বকের ছিদ্রগুলো পরিষ্কার রাখে। নিয়মিত ব্যবহারে ত্বক মসৃণ, উজ্জ্বল এবং সতেজ দেখায়।
শিশু বা বৃদ্ধদের শরীরে হালকা আঘাত লাগলে রক্তপাত থামাতে ফিটকিরির পানি ব্যবহার করা যেতে পারে। এর জীবাণুনাশক বৈশিষ্ট্য ক্ষতস্থানে সংক্রমণের ঝুঁকি কমায়। তাই ঘরোয়া প্রাথমিক চিকিৎসায় এটি একটি কার্যকর উপাদান।
মন্তব্য করুন