ইরানে হামলা করায় ইসরায়েলের বিরুদ্ধে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে অবস্থান নিয়েছে রাশিয়াসহ ৪ দেশ। শুক্রবার (২০ জুন) জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের এক বিশেষ অধিবেশনে দেশগুলোর প্রতিনিধিরা কড়া ভাষায় ইসরায়েলের নিন্দা করেন। খবর আনাদোলু এজেন্সির।
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য চীন, পাকিস্তান, রাশিয়া এবং আলজেরিয়া ইরানের উপর ইসরায়েলি হামলার নিন্দা জানিয়েছে এবং সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, এটি আঞ্চলিক শান্তির জন্য হুমকি। পারমাণবিক স্থাপনা লক্ষ্য করে হামলা বিপজ্জনক নজির স্থাপনের ঝুঁকি তৈরি করছে।
চীন, পাকিস্তান, রাশিয়া ও আলজেরিয়ার অনুরোধে ইরান সম্পর্কিত জরুরি অধিবেশনে ভাষণ দিতে গিয়ে রাশিয়ার প্রতিনিধি ভ্যাসিলি নেবেনজিয়া হামলার নিন্দা জানিয়ে বলেন, “ইরানের শান্তিপূর্ণ বেসামরিক পারমাণবিক স্থাপনাগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করা অব্যাহত রয়েছে। এটি আমাদেরকে একটি অদৃশ্য পারমাণবিক বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দিতে পারে।
তিনি সতর্ক করে বলেন, নিরাপত্তা পরিষদ তার দায়িত্ব এড়াতে পারে না । পরিস্থিতিটি বস্তুনিষ্ঠভাবে মূল্যায়ন করতে হবে। পারমাণবিক স্থাপনাগুলো হামলার মাধ্যমে লক্ষ্যবস্তু করা যাবে না। পশ্চিম জেরুজালেমকে অবিলম্বে ইরানের ওপর আক্রমণ এবং অভিযান বন্ধ করতে হবে।
নেবেনজিয়া ইসরায়েলি আগ্রাসনকে উৎসাহিত করার জন্য পশ্চিমাদের সমালোচনা করে বলেন, ব্রিটিশ, ফরাসি এবং জার্মান কূটনীতিকদের বক্তব্য মারাত্মক অস্ত্রের মতোই বিপজ্জনক। রাশিয়া ইরানে বেসামরিক স্থাপনাগুলোকে লক্ষ্য করে চলমান তীব্র ইসরায়েলি হামলাকে আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য এবং বেআইনি বলে মনে করে।
চীনা প্রতিনিধি ফু কং বলেন, ইসরায়েলের কর্মকাণ্ড আন্তর্জাতিক আইন এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের নিয়ম লঙ্ঘন, ইরানের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তাকে বিপন্ন এবং আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।
তিনি বলেন, হামলাগুলো একটি বিপজ্জনক নজির স্থাপন করে এবং এর বিপর্যয়কর পরিণতি হতে পারে। শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় বৃহত্তর ভূমিকা পালন করার জন্য কাউন্সিলকে আহ্বান জানাই।
পাকিস্তান ইসরায়েলের অযৌক্তিক ও অবৈধ আগ্রাসনের তীব্র নিন্দা জানায়। প্রতিনিধি আসিম ইফতিখার আহমেদ বলেন, ইসলামাবাদ ইসরায়েলের দ্বারা পরিচালিত স্পষ্ট আক্রমণ এবং সামরিক হামলার নিন্দা করছে। সমগ্র অঞ্চল এবং তার বাইরের শান্তি, নিরাপত্তা এবং স্থিতিশীলতার জন্য একটি গুরুতর বিপদ এবং গুরুতর হুমকি ইসরায়েল।
পাকিস্তানি প্রতিনিধি পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে ইসরায়েলের হামলার বিষয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং গাজা উপত্যকায় ক্রমবর্ধমান মানবিক সংকটকে ইসরায়েলের বৃহত্তর অস্থিতিশীল কর্মকাণ্ডের প্রমাণ হিসাবে উল্লেখ করেন।
আলজেরিয়ার জাতিসংঘের প্রতিনিধি আমার বেন্ডজামা ইসরায়েলি হামলাকে অপ্রীতিকর ও অযৌক্তিক কাজ বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ইসরায়েলের হামলা জাতিসংঘের সনদের একটি স্পষ্ট লঙ্ঘন। একটি সার্বভৌম সদস্য রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আগ্রাসনের ন্যায্যতা দেওয়ার ইসরায়েলের প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে সতর্ক করছি। এই আগ্রাসনকে গাজায় মানবাধিকার লঙ্ঘনের অংশ বলে মনে করেন তিনি।
মন্তব্য করুন