কাশ্মিরের পেহেলগামে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। এ পরিস্থিতি সামরিক সংঘাতে রূপ নিতে পারে— এমন আশঙ্কার মধ্যেই জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বসছে।
সোমবার (৫ মে) এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। পেহেলগামের হামলা পরবর্তী পরিস্থিতি ও ভারতের সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিতের সিদ্ধান্ত আলোচ্য বিষয়ে থাকবে বলে জানা গেছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, পাকিস্তানের অনুরোধে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ বৈঠকটি আহ্বান করছে। এতে পেহেলগাম হামলার পর ভারতের প্রতিক্রিয়া এবং সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিতের মতো একতরফা সিদ্ধান্ত নিয়ে আলোচনা হবে।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বৈঠকে তারা আঞ্চলিক পরিস্থিতি এবং ভারতের সাম্প্রতিক পদক্ষেপগুলো তুলে ধরবে। ইসলামাবাদ বলছে, এই কূটনৈতিক প্রচেষ্টা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে সঠিক চিত্র উপস্থাপনের একটি অংশ।
উল্লেখ্য, গত ২২ এপ্রিল পেহেলগামে হামলার পর ভারত পাকিস্তানকে দায়ী করে সীমান্তবর্তী আতারি-ওয়াঘা পথ বন্ধ করে দেয় এবং ঐতিহাসিক সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত করে। জবাবে পাকিস্তান ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য বন্ধের পাশাপাশি নিজেদের আকাশসীমা ভারতীয় বিমানের জন্য নিষিদ্ধ ঘোষণা করে।
পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে, যখন গত শনিবার পাকিস্তান ‘আবদালি’ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের সফল উৎক্ষেপণ করে। দেশটি জানায়, এটি ‘সিন্ধু মহড়া’র অংশ। ভারতের কর্মকর্তারা একে সরাসরি উসকানি বলে মন্তব্য করেছেন। ৪৫০ কিলোমিটার পাল্লার এই ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে আন্তর্জাতিক উদ্বেগও বাড়ছে।
এ প্রেক্ষাপটে রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র এবং জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মহল উভয় দেশকে সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে। রাশিয়া জানিয়েছে, উভয় দেশের সম্মতি পেলে তারা মধ্যস্থতার জন্য প্রস্তুত রয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, কূটনৈতিক সম্পর্কের অবনতি, সীমান্ত সংঘর্ষ এবং পারস্পরিক নিষেধাজ্ঞা দক্ষিণ এশিয়ায় স্থিতিশীলতাকে হুমকির মুখে ফেলেছে। ফলে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের আজকের বৈঠকে কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়, সেদিকে তাকিয়ে রয়েছে বিশ্ব সম্প্রদায়।
মন্তব্য করুন