অনেকে ওজন কমানোর জন্য দৈনন্দিন খাদ্যতালিকা থেকে শর্করার পরিমাণ কমিয়ে প্রোটিন গ্রহণ বাড়িয়ে দেন। কারণ ফিটনেস প্রশিক্ষক ও পুষ্টিবিদদের মতে, অতিরিক্ত শর্করা মেদ বৃদ্ধির অন্যতম কারণ।
কিন্তু প্রশ্ন হলো— প্রোটিন বেশি খেলেও কি শরীরে কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়ে?
ভারতের জনপ্রিয় পুষ্টিবিদ লভনীত বাত্রা বলছেন, প্রয়োজনের তুলনায় বেশি প্রাণিজ প্রোটিন বা প্রোটিন পাউডার গ্রহণ করলে তা শরীরে দ্রুত বার্ধক্যের প্রভাব আনতে পারে!
লভনীত বাত্রার মতে, প্রতিটি মানুষের শরীরে প্রোটিনের চাহিদা আলাদা। কিন্তু যখন কেউ তার প্রয়োজনের চেয়ে বেশি পরিমাণে প্রোটিন গ্রহণ করেন, তখন শরীরে ‘গ্লাইকেশন’ নামক একটি শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া শুরু হয়।
এই প্রক্রিয়ার ফলে—
✔ ত্বকে বলিরেখা দেখা দেয়
✔ অস্থিসন্ধি হয়ে পড়ে কঠিন ও অনমনীয়
✔ বিপাকক্রিয়ার গতি কমে যায়
✔ শরীরে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস তৈরি হয়
✔ প্রদাহ বৃদ্ধি পায়
এছাড়াও, অতিরিক্ত প্রোটিন গ্রহণ করলে বৃক্কের (কিডনি) ওপর অতিরিক্ত চাপ পড়ে, যা দীর্ঘমেয়াদে বিভিন্ন শারীরিক সমস্যার কারণ হতে পারে।
লভনীত বাত্রা আরও বলেন, বাজারে প্রচলিত প্রোটিন পাউডার খেলে শরীরে প্রিজারভেটিভ ও কৃত্রিম সুইটেনার প্রবেশ করে, যা ত্বককে দ্রুত বুড়িয়ে দেয়।
💡 প্রোটিনের চাহিদা নির্ধারণ করা জরুরি। সাধারণত শরীরের মোট ওজনের প্রতি কেজিতে ০.৮ গ্রাম প্রোটিন প্রয়োজন। তবে এই চাহিদা নির্ভর করে বয়স, ওজন, দৈনিক শারীরিক কার্যকলাপ ও স্বাস্থ্যের ওপর।
💡 প্রাণিজ প্রোটিনের পরিবর্তে উদ্ভিজ্জ প্রোটিন বেছে নেওয়া ভালো। উদ্ভিজ্জ প্রোটিন অ্যালকেলাইনসমৃদ্ধ এবং শরীরের জন্য তুলনামূলক বেশি উপকারী।
উদ্ভিজ্জ প্রোটিনের ভালো উৎস—
✔ ডাল
✔ কিনোয়া
✔ টোফু
✔ বাদাম ও বীজজাতীয় খাবার
💡 প্রোটিনের সঙ্গে পর্যাপ্ত অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট গ্রহণ করা জরুরি। ফলে ত্বক ও শরীর সুস্থ থাকবে।
উচ্চ ভিটামিন সি ও ই সমৃদ্ধ খাবার—
✔ তাজা ফলমূল
✔ শাকসবজি
💡 প্রোটিন পাউডারের পরিবর্তে প্রাকৃতিক খাবার থেকে প্রোটিন গ্রহণ করাই উত্তম।
প্রোটিন অবশ্যই শরীরের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, তবে অতিরিক্ত গ্রহণ করলে তা শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। তাই খাদ্যতালিকায় সঠিক পরিমাণে প্রোটিন রাখুন এবং প্রাকৃতিক উৎস থেকে প্রোটিন গ্রহণের অভ্যাস গড়ে তুলুন
মন্তব্য করুন