RCTV Logo আরসিটিভি ডেস্ক
২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ৬:৩২ অপরাহ্ন

প্রেমের টানে মানুষের রেকর্ডও ভেঙে দিল এক তিমি!

ছবি: সংগৃহীত

প্রেমের টানে মানুষ কত কিছুই না করে! ছোটবেলায় রূপকথার গল্পে পড়েছিলাম, রাজকুমার সাত সমুদ্র তের নদী পাড়ি দিয়ে রাজকন্যাকে আনতে গিয়েছিলেন। বাস্তবে এমন কোনো রাজকুমারের খোঁজ না মিললেও, এবার প্রকৃতিতেই দেখা মিলেছে এক সত্যিকারের প্রেমিকের— তবে সে মানুষ নয়, একটি হাম্পব্যাক তিমি!

এই প্রেমিক তিমি ১৩ হাজার ৪৬ কিলোমিটার (৮ হাজার ১০৬ মাইল) পাড়ি দিয়ে দক্ষিণ আমেরিকা থেকে আফ্রিকার উপকূলে পৌঁছেছে। গবেষকরা বলছেন, এটাই এখন পর্যন্ত কোনো তিমির সবচেয়ে দীর্ঘ ভ্রমণের রেকর্ড! এই যাত্রা শুধু প্রেমের নয়, তিমিদের অভিবাসন ক্ষমতার নতুন এক দিকও উন্মোচন করেছে।

এই অসাধারণ ঘটনার বিস্তারিত উঠে এসেছে রয়্যাল সোসাইটি ওপেন সায়েন্স-এ প্রকাশিত এক গবেষণাপত্রে। গবেষণা অনুযায়ী, এটাই প্রথমবার কোনো প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ হাম্পব্যাক তিমিকে প্রশান্ত মহাসাগর ও ভারত মহাসাগরের মধ্যে পাড়ি দিতে দেখা গেল।

সামুদ্রিক জীববিজ্ঞানী টেড চিজম্যানের প্রতিষ্ঠিত হ্যাপি হোয়েল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে গবেষকরা তিমিটির গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করেছেন।

  • প্রথমবার ২০১৩ সালে কলম্বিয়ার কাছে এই তিমিটিকে দেখা যায়।
  • কয়েক বছর পর আবারও একই এলাকায় পাওয়া যায়।
  • কিন্তু ২০২২ সালে হঠাৎই আফ্রিকার পূর্ব উপকূলে জাঞ্জিবারের কাছে ভারত মহাসাগরে দেখা মেলে তার!

সাধারণত একটি প্রাপ্তবয়স্ক হাম্পব্যাক তিমি ৮ হাজার কিলোমিটারের মধ্যেই ঘোরাফেরা করে, কিন্তু এই তিমিটির যাত্রাপথ ছিল প্রায় তার দ্বিগুণ!

গবেষকদের মতে, তিমিটি তার সঙ্গীর খোঁজে প্রজনন ক্ষেত্র বদলাতে পারে, অথবা কলম্বিয়ায় খাদ্যের ঘাটতি ও প্রতিযোগিতার কারণে নতুন আশ্রয় খুঁজছিল।

গবেষক চিজম্যান বলেন,

“তিমিরা স্বতন্ত্র ব্যক্তিত্বের অধিকারী এবং অবিশ্বাস্য সব কাজ করতে সক্ষম। মহাসাগরগুলো একে অপরের সঙ্গে সংযুক্ত, তাই মাঝে মাঝে তারা নিজেদের সীমারেখা ছাড়িয়ে যায়।”

সাধারণত তিমিরা প্রতি বছর নির্দিষ্ট প্রজনন অঞ্চলে ফিরে আসে, কিন্তু এই তিমিটি দুটি ভিন্ন মহাসাগরের দুই প্রজনন ক্ষেত্রের মধ্যে বিচরণ করেছে। গবেষকরা বলছেন, এটি তিমিদের অভিবাসন ও প্রজনন আচরণে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিতে পারে।

হ্যাপি হোয়েল প্ল্যাটফর্মে বর্তমানে প্রায় ১ লাখ ৯ হাজার তিমির তথ্য সংরক্ষিত রয়েছে। তবে এই বিশেষ তিমিটি এখন কোথায় রয়েছে, তা অজানা। গবেষকরা এখনো তার সন্ধান চালিয়ে যাচ্ছেন।

গবেষণা বলছে, তিমিদের এই অস্বাভাবিক অভিবাসনের ফলে ভবিষ্যতে বিভিন্ন অঞ্চলের তিমিদের মধ্যে আরও বেশি সংযোগ তৈরি হতে পারে।

একটা তিমিও যদি ভালোবাসার জন্য এমন পথ পাড়ি দিতে পারে, তাহলে মানুষ তো বটেই!

Facebook Comments Box

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ফিলিস্তিনে প্রাণের অস্তিত্বের শক্ত প্রমাণ পেলেন বিজ্ঞানীরা

ফিলিস্তিনে কেন আরবরা সফল হচ্ছে না?

হিজবুল্লাহকে নিরস্ত্র করার সাধ্য নেই: হুঁশিয়ারি দিলেন মহাসচিব নাঈম কাসেম

বাফুফের প্রধান অর্থ কর্মকর্তা সরফরাজ হাসান সিদ্দিকীর পদত্যাগ

হোয়াইট হাউসের নতুন ওয়েবসাইটে দাবি: চীনের ল্যাব থেকেই ছড়ায় কোভিড-১৯

ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল পাকিস্তান, প্রাণহানির খবর নেই

সিরিয়ায় অর্ধেকে কমানো হচ্ছে মার্কিন সেনা সংখ্যা

জানাল ক্রেমলিন ইউক্রেনের জ্বালানি অবকাঠামোতে হামলা স্থগিতের মেয়াদ শেষ

যুক্তরাষ্ট্রে থাকা আফগান শরণার্থীদের ৭ দিনের মধ্যে দেশ ছাড়ার নির্দেশ

রোমে দ্বিতীয় দফায় পারমাণবিক আলোচনায় বসছে ইরান-যুক্তরাষ্ট্র

১০

গরমের ৬ সমস্যা দূর করবে সাদা পাথর

১১

সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন বাংলাদেশের জন্য সমন্বিত পথ

১২

বিশ্ব লিভার দিবস আজ

১৩

পিপিপির হুঁশিয়ারি: সিন্ধু নদে খাল প্রকল্প বন্ধ না হলে কেন্দ্রীয় জোট ছাড়বে

১৪

আপিল বিভাগে দুটি বেঞ্চ গঠন বিচারকাজ ত্বরান্বিত

১৫

পাকিস্তানের বিপক্ষে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ

১৬

আলোচনায় সন্তুষ্ট নয়, আন্দোলন কঠোর করার ঘোষণা কারিগরি শিক্ষার্থীদের

১৭

হামাসকে কৃতজ্ঞতা জানালেন পুতিন, কিন্তু কেন?

১৮

ছেড়ে যাওয়ার ক্ষণ গুনছেন আনচেলত্তি

১৯

গাজায় নতুন করে ইসরাইলি আগ্রাসনে বাস্তুচ্যুত আরও ৫ লাখ ফিলিস্তিনি

২০