আসন্ন পবিত্র রমজান মাসে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা নেই, কারণ দেশে পর্যাপ্ত পণ্য মজুত রয়েছে। বাজার ব্যবস্থাকে ভোক্তাবান্ধব রাখতে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে, যার ফলে বাজারমূল্য স্থিতিশীল থাকবে।
শিল্প সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও কর্তৃপক্ষের মতে, এ মৌসুমে দেশে আলু, পেঁয়াজ ও অন্যান্য শীতকালীন সবজির বাম্পার উৎপাদন হয়েছে, যা বাজারমূল্য স্থিতিশীল রাখতে সহায়তা করবে।
এছাড়া, অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টারা সারা দেশের কাঁচাবাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেছেন। ইতোমধ্যে সরকারি বিভিন্ন সংস্থা বাজার নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
মেঘনা গ্রুপের জেনারেল ম্যানেজার তসলিম শাহরিয়ার জানান, রমজানে ভোজ্যতেল ও চিনির কোনো সংকট হবে না, কারণ পর্যাপ্ত পরিমাণে মজুত নিশ্চিত করা হয়েছে।
বাংলাদেশে বার্ষিক ভোজ্যতেলের চাহিদা ২০ লাখ টন, যেখানে রমজান মাসে চাহিদা বাড়তে পারে তিন লাখ টন পর্যন্ত। সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর মতে, মজুত পর্যাপ্ত থাকায় কোনো সংকটের সম্ভাবনা নেই।
ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বারস অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই) সূত্রে জানা গেছে, গত অর্থবছরে (২০২৪) দেশে উৎপাদিত সয়াবিনের পরিমাণ ছিল ১.৭২ লাখ মেট্রিক টন, সূর্যমুখী ২৭,০০০ মেট্রিক টন ও সরিষা ১৬.৭ লাখ মেট্রিক টন।
সরকার নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের আমদানির উপর শুল্ক মওকুফ করেছে, যার ফলে বাজারে সরবরাহ বাড়বে এবং দাম স্থিতিশীল থাকবে। পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রার সংকট হ্রাস পাওয়ায় ঋণপত্র (এলসি) খোলার প্রক্রিয়াও সহজ হয়েছে।
বাংলাদেশ বাণিজ্য ও শুল্ক কমিশনের (বিটিটিসি) ৫ ফেব্রুয়ারির তথ্য অনুযায়ী:
দেশের প্রধান খাদ্যশস্য ও পণ্য যেমন চাল, গম, চিনি, ছোলা, খেজুর, মসুর ডাল, পেঁয়াজ, আদা, রসুন, লবণ ও আলুর মজুত যথেষ্ট পরিমাণে রয়েছে।
বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু জানান, চলতি বছর দেশে আলু উৎপাদন হয়েছে ১.৩০ কোটি টন, যা লক্ষ্যমাত্রার (১.১৩ কোটি টন) চেয়ে বেশি। কৃষক পর্যায়ে আলুর বিক্রয়মূল্য প্রতি কেজি ১০ টাকা, খুচরা পর্যায়ে ২০ থেকে ২৫ টাকা।
এছাড়া, ডিমের বাজার স্থিতিশীল এবং শীতকালীন সবজির সরবরাহ ও দাম স্বাভাবিক রয়েছে।
বাজার পর্যবেক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা জোরদার করায় সরবরাহ শৃঙ্খলা নিশ্চিত হয়েছে, যা ভোক্তাদের সন্তুষ্টি ও স্বস্তি দিচ্ছে।
৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত খাদ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী:
সরকারের কার্যকর উদ্যোগ এবং পর্যাপ্ত উৎপাদন ও আমদানির ফলে আসন্ন রমজান মাসে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে থাকবে। ফলে সাধারণ ভোক্তারা স্বস্তিতে তাদের প্রয়োজনীয় পণ্য সংগ্রহ করতে পারবেন।
মন্তব্য করুন