উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় আহতদের চিকিৎসায় সহায়তা করতে ঢাকায় এসে পৌঁছেছেন সিঙ্গাপুরের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দল।

মঙ্গলবার (২২ জুলাই) গভীর রাতে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র কনসালট্যান্ট ডা. চোং সি জ্যাক। তাকে বিমানবন্দরে স্বাগত জানান স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, মাইলস্টোন দুর্ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশি চিকিৎসকদের চিকিৎসা সহায়তা ও পরামর্শ দিতে এই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দলকে আনা হয়েছে। ডা. চোং সি জ্যাকের এই আগমনকে চিকিৎসা ব্যবস্থাপনায় আন্তর্জাতিক সহযোগিতার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

জানা গেছে, বুধবার (২৩ জুলাই) আরও তিনজন সিঙ্গাপুরের প্রতিনিধি বাংলাদেশ সফরে আসছেন। তারা হলেন সিং হেলথের সিনিয়র ডিরেক্টর বিজয়া রাও, পুন লাই কুয়ান এবং লিম ইউ হান জোভান।

এর আগে, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান জানান, সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালের সঙ্গে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের সমঝোতা স্মারক (MoU) রয়েছে। এই চুক্তির আওতায় সিঙ্গাপুর থেকে কেস রিপোর্ট পাঠিয়ে চিকিৎসক সহায়তা চাওয়া হয়। তারই প্রেক্ষিতে একজন সিনিয়র কনসালট্যান্ট ও দুজন নার্স ঢাকায় এসে পৌঁছেছেন।

আইএসপিআর সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ছিল ৩১ জন। রাতে সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৩২-এ। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সর্বশেষ তথ্যমতে, এখন পর্যন্ত ২৭ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে, যাদের মধ্যে ২৩ জনই শিশু।

স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম জানান, নিহতদের অনেকের পরিচয় এখনও শনাক্ত করা যায়নি। ২০টি মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে, বাকি ৬টি রাখা হয়েছে সিএমএইচ মর্গে। নিহত বৈমানিক ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির ইসলামের মরদেহ রাজশাহীতে দাফন করা হয়েছে।

আইএসপিআরের তথ্যানুযায়ী, দুর্ঘটনায় মোট আহত হয়েছেন ১৬৫ জন। বর্তমানে তারা বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন, যাদের মধ্যে রয়েছেন—

কুয়েত বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতালে: ৮ জন, জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে: ৪৬ জন, ঢাকা মেডিকেল কলেজে: ৩ জন, সিএমএইচে: ২৮ জন, লুবনা জেনারেল হাসপাতালে: ১৩ জন, উত্তরা আধুনিক হাসপাতালে: ৬০ জন, উত্তরা ক্রিসেন্ট হাসপাতালে: ১ জন. শহীদ মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে: ১ জন

ইউনাইটেড হাসপাতালে: ২ জন, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে: ৩ জন ।