বেশ কয়েক বছর ধরে বলিউড ইন্ডাস্ট্রি দক্ষিণী সিনেমার কাছে পিছিয়ে পড়ছে, আর এই অবস্থায় বলিউডকে চাঙ্গা করতে অর্থের বিনিময়ে সিনেমার রিভিউ তৈরির কৌশল অবলম্বন করার অভিযোগ উঠেছে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা সম্প্রতি বলিউডের এই দিকটি তুলে ধরেছে, যা বর্তমানে ইন্ডাস্ট্রির জন্য ক্ষতিকর হয়ে উঠেছে।
টাকার বিনিময়ে রিভিউ: বর্তমানে বলিউড সিনেমার ৭০-৮০% রিভিউই অর্থপ্রদত্ত। ইনফ্লুয়েন্সার, ট্রেড অ্যানালিস্ট এবং সংবাদমাধ্যমের মাধ্যমে সিনেমার প্রচারে ইতিবাচক রিভিউ প্রদান করা হয়। এই প্রচারের জন্য ৭০ লাখ থেকে ৭ কোটি টাকা পর্যন্ত খরচ করা হয়। এছাড়া, কিছু ইনফ্লুয়েন্সারকে আইফোন এবং বিলাসবহুল হোটেলে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থাও করা হয়।
তবে এই কৌশল এখন ব্যর্থ হচ্ছে, কারণ দর্শকরা এখন ভুয়া রিভিউর ওপর আর বিশ্বাস করছেন না। এর ফলে, ওটিটি প্ল্যাটফর্ম (Netflix, Amazon, Disney+) এখন সিনেমা কেনার ক্ষেত্রে নতুন নীতি গ্রহণ করেছে, যা সিনেমার আসল সাফল্যের ওপর ভিত্তি করে।
বলিউডের সংকট: অতীতের ব্যর্থতার পর, বলিউডের কিছু বড় প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছে। উদাহরণস্বরূপ, ধর্ম প্রোডাকশনের সিনেমা ‘জিগরা’ প্রচারের সময় সোশ্যাল মিডিয়াতে অতিরঞ্জিত জনপ্রিয়তা তৈরির পরেও ব্যর্থ হয়েছে। এর পর, করণ জোহর ধর্ম প্রোডাকশনের ৫০% মালিকানা ১৪০৮ কোটি টাকায় ভারতীয় বিলিয়নিয়ার আদার পুনাওয়ালার কাছে বিক্রি করেছেন, যা বলিউডের অর্থনৈতিক সংকটের ইঙ্গিত দেয়।
চাঁদাবাজি এবং ব্ল্যাকমেইল: এছাড়া, চলচ্চিত্র সমালোচকরা অনেক সময় প্রযোজকদের ব্ল্যাকমেইল করছেন, অর্থ না দিলে নেতিবাচক রিভিউ দেওয়ার হুমকি দিয়ে। এটি বলিউডের সিনেমা প্রচারের পদ্ধতিকে একটি “চাঁদাবাজি” হিসেবে পরিণত করেছে।
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ: বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বলিউড এখন যদি সত্যিই টিকে থাকতে চায়, তাহলে ভুয়া রিভিউয়ের ওপর নির্ভর না করে ভালো সিনেমা তৈরি করতে মনোযোগী হতে হবে। বড় তারকারাও অর্থপ্রদত্ত রিভিউকে শুধুমাত্র বিজ্ঞাপন হিসেবে দেখার পরামর্শ দিয়েছেন।
বর্তমানে বলিউডের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো, তারা ভুয়া জনপ্রিয়তা তৈরির ওপর বেশি মনোযোগ দিয়েছে, কিন্তু দর্শকরা এখন এসব বুঝতে পারছেন। তাই বলিউডের জন্য এ কৌশল আর কার্যকরী নয়।
মন্তব্য করুন