২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি নৃশংসভাবে খুন হন। রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারের তাদের ভাড়া বাসায় ঘটে এই হত্যাকাণ্ড। সাগর ছিলেন মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক এবং রুনি এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক। ১৩ বছর পেরিয়ে গেলেও এই হত্যার রহস্য এখনো অমীমাংসিত। তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার তারিখ ১১৫ বার পিছিয়েছে, সর্বশেষ আগামী ২ মার্চ তারিখ ধার্য হয়েছে।
হত্যাকাণ্ডের পর তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন দ্রুত রহস্য উদ্ঘাটনের আশ্বাস দিলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি। প্রথমে শেরেবাংলা নগর থানা, পরে ডিবি এবং সর্বশেষ প্রায় সাড়ে ১২ বছর তদন্ত করেও সফল হয়নি। ২০২২ সালের ৫ অক্টোবর র্যাব সর্বশেষ অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল করে। বর্তমানে পিবিআই তদন্ত করছে, এবং তারা ৬২ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে, যার মধ্যে রয়েছেন বিশিষ্ট সাংবাদিক, টেলিভিশন চ্যানেলের মালিক ও সাবেক পুলিশ কর্মকর্তারা।
মামলার বাদী ও রুনির ভাই নওশের আলম রোমান আশাবাদী হলেও পুরোপুরি নিশ্চিত হতে পারছেন না। তিনি বলেন, “আমরা চাই, প্রকৃত খুনিদের চিহ্নিত করা হোক।” সাগর-রুনির একমাত্র সন্তান মিহির সরওয়ার মেঘ, যার বয়স তখন সাড়ে চার বছর ছিল, এখন এ লেভেল পাস করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পরীক্ষাগার থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, রুনিকে পেছন থেকে ডান হাত দিয়ে পেটের ডান পাশে কোপ দেওয়া হয়েছিল, এবং সেখানে অজ্ঞাত এক ব্যক্তির ডিএনএ পাওয়া গেছে। সাগরের হাত-পা বাঁধা ছিল সবুজ রঙের ওড়না দিয়ে, যেখানে আরেকজনের ডিএনএ শনাক্ত হয়েছে। পিবিআই এখন সেই দুই অজ্ঞাত ব্যক্তির ডিএনএ মেলানোর চেষ্টা করছে।
সাগর-রুনির হত্যার বিচার দাবিতে সাংবাদিক সমাজ বিভিন্ন সময়ে কর্মসূচি পালন করেছে। তবে এখনো রহস্য রয়ে গেছে অমীমাংসিত। পিবিআই প্রধান মোস্তফা কামাল আশা প্রকাশ করেছেন যে দ্রুতই রহস্য উদ্ঘাটিত হবে।
মন্তব্য করুন