প্রতি বছর ২৫ এপ্রিল বিশ্ব ম্যালেরিয়া দিবস পালন করা হয়। এই দিনে ম্যালেরিয়া প্রতিরোধ, চিকিৎসা এবং সচেতনতা তৈরিতে জোর দেওয়া হয়। ম্যালেরিয়ার সবচেয়ে ভয়ঙ্কর জটিলতা হলো সেরিব্রাল ম্যালেরিয়া, যা মস্তিষ্কের কোষগুলিকে সরাসরি প্রভাবিত করে।
সেরিব্রাল ম্যালেরিয়া ঘটে স্ত্রী অ্যানোফিলিস মশার মাধ্যমে বহনকৃত Plasmodium falciparum পরজীবীর সংক্রমণে। সংক্রমণের পরে এই পরজীবী লোহিত রক্তকণিকার মধ্যে বৃদ্ধি পায় এবং মস্তিষ্কের ছোট রক্তনালীগুলিকে আটকে দেয়, ফলে প্রদাহ, ফোলাভাব এবং মস্তিষ্কের টিস্যুর ক্ষতি হয়।
সংক্রমণের ৭-১০ দিনের মধ্যে সেরিব্রাল ম্যালেরিয়ার লক্ষণ দেখা দিতে পারে। এগুলো হলো:
উচ্চ জ্বর
খিঁচুনি
বিভ্রান্তি
চেতনা হারানো বা কোমায় চলে যাওয়া
অস্বাভাবিক অঙ্গবিন্যাস (ডেসেরেব্রেট বা ডেকোরটিকেট)
শ্বাসকষ্ট
শিশুদের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত লক্ষণ দেখা দিতে পারে, যেমন:
অস্বাভাবিক রেগে যাওয়া
খাবারে অনীহা
বমি ভাব
সেরিব্রাল ম্যালেরিয়া শনাক্ত করতে:
রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে ম্যালেরিয়া পরজীবী শনাক্ত করা হয় (মাইক্রোস্কোপি বা দ্রুত পরীক্ষার কিট – RDT ব্যবহার করে)।
মস্তিষ্কের ইমেজিং (সিটি স্ক্যান বা এমআরআই) এবং কটিদেশীয় খোঁচা (lumbar puncture) করে মেনিনজাইটিসের মতো অন্যান্য স্নায়বিক সমস্যা বাদ দেওয়া হয়।
সেরিব্রাল ম্যালেরিয়া জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন:
শিরায় আর্টেসুনেট বা কুইনাইন দিয়ে দ্রুত চিকিৎসা শুরু করা হয়।
খিঁচুনির নিয়ন্ত্রণ, তরল এবং অক্সিজেন ব্যবস্থাপনা সহ সহায়ক যত্ন খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
অধিকাংশ ক্ষেত্রে রোগীকে নিবিড় পরিচর্যা ইউনিটে (ICU) রাখতে হয়।
সেরিব্রাল ম্যালেরিয়া এড়াতে কিছু সাবধানতা মেনে চলা উচিত:
কীটনাশকযুক্ত মশারি ব্যবহার
ঘরের ভেতর অবশিষ্ট স্প্রে করা
ম্যালেরিয়া প্রবণ এলাকায় গেলে প্রতিরোধমূলক ওষুধ সেবন
ম্যালেরিয়া হলে দ্রুত সনাক্ত ও চিকিৎসা নিশ্চিত করা
মন্তব্য করুন