গাজা, ফিলিস্তিন – ইসরায়েলের অবরোধ ও অবিরাম হামলায় ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডে তীব্র মানবিক সংকট তৈরি হয়েছে। প্রায় ১৮ মাস ধরে চলা এই আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত ৬২ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। পাশাপাশি, ইসরায়েল গাজায় সর্বাত্মক অবরোধ জারি রেখে খাদ্য ও মানবিক সহায়তা প্রবেশে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।
ইসরায়েলি অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচ স্পষ্ট করে বলেছেন, গাজায় কোনো অবস্থাতেই গমের একটি দানাও প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। তার এই বক্তব্য গাজায় চলমান খাদ্য সংকটকে আরও গভীর করেছে। গত ২ মার্চ থেকে ইসরায়েল গাজার সব সীমান্ত ক্রসিং বন্ধ করে দিয়েছে, যার ফলে ত্রাণসামগ্রী, চিকিৎসা সরঞ্জাম ও অন্যান্য মানবিক সহায়তা বন্ধ হয়ে গেছে।
গত ১৮ মার্চ থেকে ইসরায়েল গাজায় নতুন করে বিমান হামলা চালাচ্ছে, যাতে প্রায় ১,৪০০ ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৩,৪০০ জনের বেশি আহত হয়েছেন। এই হামলা চলতি বছরের জানুয়ারিতে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তিও ভেঙে দিয়েছে। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু গাজায় অভিযান আরও বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন।
ইসরায়েলের এই নৃশংসতা ও অবরোধের বিরুদ্ধে বিশ্বজুড়ে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ চলছে। গত নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। এছাড়া, আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলা দায়ের করা হয়েছে।
ইসরায়েলি সরকার ফিলিস্তিনিদের গাজা থেকে উচ্ছেদের জন্য প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের চেষ্টা চালাচ্ছে। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের হামলায় ৫০ হাজার ৭০০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।
গাজায় চলমান এই সংকটে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করছে ফিলিস্তিনি জনগণ। জাতিসংঘ ও বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা অবরোধ তুলে নেওয়া ও মানবিক সহায়তা পুনরায় চালুর আহ্বান জানিয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে গাজার বেসামরিক জনগণের জীবনযাত্রা চরম সংকটে পড়েছে, যা বিশ্ববাসীর কাছে উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মন্তব্য করুন