RCTV Logo আরসিটিভি ডেস্ক
৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ৪:০০ অপরাহ্ন

চট্টগ্রাম বন্দরে শিপ হ্যান্ডলিং অপারেটর,ভিন্ন মোড়কে ফেরার চেষ্টা লাইসেন্স বাতিল হওয়া ২৩ প্রতিষ্ঠানের

ছবি ; সংগৃহিত

নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ (চবক) ২৩টি শিপ হ্যান্ডলিং অপারেটরের লাইসেন্স প্রদান করেছিল। উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে এসব লাইসেন্স তৎকালীন সরকারের মন্ত্রী, এমপি ও আওয়ামী লীগ নেতাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। সরকারের পরিবর্তনের পর এসব লাইসেন্স বাতিল করা হলেও সম্প্রতি পুনরায় টেন্ডার ছাড়াই শিপ হ্যান্ডলিং অপারেটর লাইসেন্স ফিরে পেতে তৎপর একটি পক্ষ।

আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি এমএ লতিফের ব্যবসায়িক অংশীদার মেসার্স ডিভি আবদুল আজিজ অ্যান্ড কোম্পানিকে ইতোমধ্যে নতুন লাইসেন্স প্রদান করা হয়েছে। একইভাবে মেসার্স এমএন মিয়া অ্যান্ড সন্স নামের আরেকটি প্রতিষ্ঠানকেও লাইসেন্স দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে, যা বিদ্যমান অপারেটরদের মধ্যে নতুন করে শঙ্কা তৈরি করেছে।

শিপ হ্যান্ডলিং অপারেটররা বন্দরের এমন সিদ্ধান্তকে ‘নজিরবিহীন’ বলে অভিহিত করেছেন এবং এটি বিগত সরকারের ‘পদাঙ্ক অনুসরণ’ করার মতো ঘটনা বলে মন্তব্য করেছেন। তারা টেন্ডার ছাড়া কোনো নতুন লাইসেন্স না দেওয়ার জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষকে আহ্বান জানিয়েছেন।

২০২৩ সালের ২১ মে ‘চট্টগ্রাম বন্দরে শিপ হ্যান্ডলিং অপারেটর, মন্ত্রী-এমপি আওয়ামী লীগ নেতার হাতেই ২০ লাইসেন্স’ শীর্ষক সংবাদ প্রকাশিত হলে বিষয়টি আলোচনায় আসে। বন্দর কর্তৃপক্ষ তখন বলেছিল, বিধিবিধান মেনেই লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বর্তমান বন্দর কর্তৃপক্ষের মতে, টেন্ডার ছাড়া লাইসেন্স প্রদান করা সঠিক ছিল না।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব ওমর ফারুক জানান, নতুন অনুমতি দেওয়া প্রতিষ্ঠানটি আগে বন্দরে কাজ করত এবং নানা কারণে তাদের লাইসেন্স স্থগিত হয়েছিল। তারা জরিমানা বা ফি দিয়ে পুনরায় লাইসেন্স নবায়ন করেছে। তবে বাতিল হওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোও যদি জরিমানা বা ফি দিয়ে লাইসেন্স চায়, তাহলে বন্দর কর্তৃপক্ষ না করতে পারে না।

বর্তমানে বন্দরের তালিকাভুক্ত ৩২টি প্রতিষ্ঠান শিপ হ্যান্ডলিং অপারেটর হিসেবে বহির্নোঙরে ও কুতুবদিয়া গভীর সমুদ্রবন্দরে কাজ করছে। প্রতিবছর প্রায় ৫ কোটি টন পণ্য হ্যান্ডলিং করে প্রতিষ্ঠানগুলো। কিন্তু বিগত সরকারের সময়ে মন্ত্রী, এমপি ও আওয়ামী লীগ নেতাদের হাতে ২৩টি লাইসেন্স তুলে দেওয়া হয়, যার ফলে বিদ্যমান অপারেটরদের আয় কমে যায় এবং ব্যবসার ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।

লাইসেন্স পাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ছিলেন সাবেক মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের স্ত্রী, সাবেক এমপি এমএ লতিফ, তার ছেলে ওমর হাজ্জাজ, বরিশালের তৎকালীন মেয়র খোকন সেরনিয়াবাত, শেখ হাসিনার আত্মীয় নুরুল কাইয়ুম খান, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক শাহজাদা মহিউদ্দিন, পাঠানটুলি ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মোহাম্মদ জাবেদ, ছাত্রলীগের সাবেক নেতা আরশেদুল আলম বাচ্চু ও সীমান্ত তালুকদারসহ আরও অনেকে।

বন্দর অপারেটরদের আশঙ্কা, যদি আবারও টেন্ডার ছাড়া লাইসেন্স দেওয়া হয়, তবে বহির্নোঙরে পণ্য খালাস কার্যক্রমে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হতে পারে। ফলে তারা চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানিয়েছেন, নিয়মনীতি মেনে এবং স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শিপ হ্যান্ডলিং অপারেটরদের লাইসেন্স দেওয়া হোক।

Facebook Comments Box

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

শুভ বুদ্ধপূর্ণিমা আজ

আকাশসীমা খুলে দিল পাকিস্তান

যুদ্ধবিরতি কার্যকরের ঘোষণা পাকিস্তানের

ইসরাইলি হামলায় গাজায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৫২,৮১০

ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধবিরতি: কার্যকর সময় ও বিস্তারিত

ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষ: সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কূটনৈতিক প্রচেষ্টা

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি: ঈদুল আজহা ও গ্রীষ্মকালীন অবকাশের সময়সূচি ঘোষণা

ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ পরিস্থিতিতে মিডিয়াকে ‘সার্কাস’ বললেন সোনাক্ষী

ঈদের এক মাস আগেই মসলার বাজারে আগুন

অল্প উপকরণ দিয়ে বাড়িতেই বানান আইসক্রিম

১০

৪৮ দল নিয়ে নারী বিশ্বকাপের অনুমোদন দিল ফিফা

১১

বরেণ্য সংগীতশিল্পী মুস্তাফা জামান আব্বাসী আর নেই

১২

পাকিস্তান ছেড়ে দেশে ফিরছেন রিশাদ ও নাহিদ

১৩

ভারতের এস-৪০০ ধ্বংসের দাবি পাকিস্তানের

১৪

পাকিস্তানের হামলায় কাশ্মীরের জেলা কমিশনার নিহত

১৫

সাবেক এমপি সেলিনা ইসলাম গ্রেপ্তার

১৬

ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা, আইপিএলের বাকি অংশ ইংল্যান্ডে!

১৭

সারা দেশের মহাসড়কে ব্লকেড না দেওয়ার আহ্বান হাসনাতের

১৮

তিন দফা দাবিতে ‘শাহবাগ ব্লকেড’, বিকেলে গণজমায়েত

১৯

ভারতে পাল্টা হামলা শুরু করেছে পাকিস্তান

২০