নিজস্ব প্রতিবেদক 

তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে আরও দেরি না করার দাবি জানিয়েছেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু । তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানান, নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার আগেই রাষ্ট্রীয় তহবিলের অর্থ দিয়ে নভেম্বর মাসে এই মহাপরিকল্পনার কাজ শুরু করতে। তিনি বলেন, পরবর্তীতে নির্বাচিত সরকারই এই কাজের ধারাবাহিকতা রক্ষা করবে।
শুক্রবার (৩ অক্টোবর) সকালে রংপুর চেম্বার ভবন মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ সব কথা বলেন। তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী আসাদুল হাবিব দুলু সরকারের তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে গতি না পাওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেন।
তিনি তার বক্তব্যে বলেন, “স্বৈরাচারী পতিত হাসিনা সরকার কথা দিয়ে তিস্তা মহাপরিকল্পনার স্বপ্ন তরী তিস্তার তীরে নিয়ে এসে ডুবিয়ে দিয়েছিল। আমরা আর আশাহত হতে চাই না। আমরা চাই নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার আগে রাষ্ট্রের নিজস্ব কোষাগারের টাকা দিয়েই নভেম্বরে এই মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের কাজ শুরু হোক।”
তিনি প্রকল্পের অর্থায়নের বর্তমান পরিস্থিতি উল্লেখ করে বলেন, “১২ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ১০ বছর মেয়াদি তিস্তা প্রকল্পের প্রথম পর্যায় বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ৯ হাজার ১৫০ কোটি টাকা। এর মধ্যে চীনের কাছে ঋণ চাওয়া হয়েছে ৬ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। বাকি ২ হাজার ৪১৫ কোটি টাকা সরকারি কোষাগার থেকে দেওয়া হবে।”
তবে তিনি জানান, চীনের সঙ্গে এখনো চূড়ান্ত আর্থিক চুক্তি হয়নি। তার মতে, চলতি বছরের শেষে চীনের সঙ্গে প্রযুক্তি এবং ঋণ চুক্তি সম্পন্ন হতে পারে। এজন্য তিনি আগামী একনেক সভায় প্রকল্পের জন্য অর্থ বরাদ্দ নিশ্চিত করার জরুরি প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন।
তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেন, “অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদকালেই তিস্তা মহাপরিকল্পনা কাজের শুভ উদ্বোধন করতে হবে। অন্যথায় কঠোর আন্দোলনের মাধ্যমে দাবি আদায় করে নেওয়া হবে।”
আসাদুল হাবিব দুলু বলেন, তিস্তা মহাপরিকল্পনা তিস্তা অববাহিকার ২ কোটিরও বেশি মানুষের ‘প্রাণের দাবি’ । এসময় তিনি গত ফেব্রুয়ারিতে তিস্তার দুই তীরে ৪৮ ঘণ্টার ব্যাপক অবস্থান কর্মসূচির সফলতা এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ভার্চুয়ালি সংহতি জানানোর কথা স্মরণ করিয়ে দেন।
তিনি বলেন, “ঘর পোড়া গরু সিঁদুরে মেঘ দেখলে ডরায়। আমরা আর কোনো প্রতিশ্রুতি নয়, এখন মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের কাজের শুরু দেখতে চাই। এটা আমাদের ২ কোটি মানুষের প্রাণের দাবি।”
তিনি আগামী ৫, ৯ এবং ১৬ অক্টোবর পদযাত্রা, স্মারকলিপি প্রদান, গণমিছিল, গণসমাবেশ এবং মশাল প্রজ্জ্বলনের কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে রংপুর মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সামসুজ্জামান সামু, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম, সদস্য সচিব আনিছুর রহমান লাকুসহ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন