পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে কেউ একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে না। এতে বিরোধী দল শক্তিশালী হবে, সংসদ শক্তিশালী হবে, রাষ্ট্র কাঠামো শক্তিশালী হবে। এজন্যই আমরা সহ অন্য দলগুলো পিআর পদ্ধতি নির্বাচনের জোর দাবি জানাচ্ছি। বিএনপি সহ তিনটা দল বাদ দিয়ে সব দল পিআর পদ্ধতির পক্ষে। তাদের কি আশঙ্কা আমরা বুঝতে পারছি না। জিততে পারবেনা, সরকার গঠন করতে পারবে না এই আশঙ্কা নিয়ে হয়তো তারা পিয়ার পদ্ধতি নির্বাচন চায় না বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দীয় মজলিসের সূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি এবং ছাত্র শিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি, ঠাকুরগাঁও-১ আসনে জামায়াত মনোনীত প্রার্থী দেলাওয়ার হোসেন।
শনিবার (৫ জুলাই) বিকালে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ভোলারহাট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ভোট কেন্দ্র কমিটির সদস্যদের প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, পিআর পদ্ধতি না থাকার কারণে মমতাজের মতো মহিলারা নির্বাচিত হয়। তিনি সংসদে গিয়ে একজন এমপির হলো আইন তৈরি করা। আর লোকাল গর্ভমেন্টের অর্থাৎ মেম্বার-চেয়ারম্যানের কাজ হলো জনগণের উন্নয়নের কাজ করা। মমতাজের মতো গায়কারা যদি এমপি হয় তাহলে সে আইন সম্পর্কে কি বুঝবে? সে আইন বুঝে? কি আইন পাস করবে? যার কারণে সে উপজেলার চেয়ারম্যানের কাজ গুলো করে। যেটা ওর (মমতাজ) কাজ না। তাই আমরা মনে করি পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে সঠিক লোকেরা সংসদে বসতে পারবে।
তিনি আরও বলেন, দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে রাস্ট্রের প্রতিটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করা হয়ে। এই ধ্বংস স্তুবের উপর নির্বাচন দিলে এই নির্বাচন হবে আওয়ামী মার্কা নির্বাচন। দিনের ভোট রাতে হবে। আমি-ডামি নির্বাচন হবে। ভোট কেন্দ্র দখল হবে, কালো টাকার ব্যবহার হবে। এই জন্য আমরা বলছি আগে মৌলিক সংস্কারগুলো করতে হবে।
জামায়াতে ইসলামীর এই নেতা বলেন, একটি দল বলছে তারা ক্ষমতা গিয়ে নাকি বিচার করবে। কি বিচার করবেন এখনেই তো বোঝা যাচ্ছে। মামলা বানিজ্য চলছে, টাকা দিয়ে তার নাম কাটা হচ্ছে। টাকা দিলেই মামলা আর না দিলে মামলা নাই। তাহলে কি বিচার করবে তারা? বাংলাদেশের মানুষকে ভৌগল বোঝানো যাবে না। যারা আমাদের উপর অত্যাচার চালিয়েছে। গুম’ খুন করেছে বিনা অপরাধে জেল খাটিয়েছে, জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার উপর নির্বিচারে গণাহারে গুলি চালিয়ে হত্যা করেছে তাদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত কোন নির্বাচন হবে না।
দেলাওয়ার হোসেন বলেন, জুলাই সনদ এখন পর্যন্ত হলো না। এক বছর চলে গেল। এটা সরকারের জন্য একটা বড় ব্যর্থতা। আপনার তো নির্বাচিত সরকার না, একটা গণঅভ্যুতনে সরকার, আপনাদের বসানো হয়েছে। আপনাদের কাজ হল যারা আপনাদেরকে রক্ত দিয়েছি চেয়ারে বসিয়েছে তাদের স্বপ্নগুলোকে বাস্তবায়ন করা। একটা নিরাপদ বাংলাদেশের জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করা। এত বড় একটা গণঅভ্যুত্থান হল তার কোন সাংবিধানিক স্বীকৃতি নাই।
দেলাওয়ার হোসেন প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেন, “আমরা নির্বাচিত হলে ঠাকুরগাঁওয়ে একটি মেডিকেল কলেজ স্থাপন করব। সরকারি হাসপাতালগুলোতে পর্যাপ্ত চিকিৎসা সেবা ও জনবল নেই, আমরা সেগুলোর আধুনিকায়ন করব। আমার স্বপ্ন, ঠাকুরগাঁওয়ে কোনো বেকার যুবক থাকবে না। তাদের প্রশিক্ষণ, বিনা সুদের পুঁজি ও উদ্যোগ দিয়ে স্বাবলম্বী করা হবে। কৃষকরা ন্যায্য মূল্য পাচ্ছে না, এজন্য শিল্প কারখানা স্থাপন করব, যাতে কর্মসংস্থান বাড়ে এবং কৃষকরাও উপকৃত হয়।”
সকল ধর্মাবলম্বীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “জামায়াতে ইসলামী ইনসাফ ও সাম্যের ভিত্তিতে দেশ পরিচালনা করতে চায়। আমরা ক্ষমতায় গেলে মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান সবাই সমান অধিকার পাবে। আওয়ামী লীগ সংখ্যালঘুদের জমি দখল ও নির্যাতন করেছে, আমরা তা বন্ধ করব।
অনুষ্ঠানে জেলা জামায়াতের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ মো: কফিল উদ্দিন আহমেদ, রুহিয়া থানা জামায়াতের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রশিদসহ প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন