মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষণা সত্ত্বেও মধ্যপ্রাচ্যের উত্তপ্ত পরিস্থিতি শান্ত হচ্ছে না। সোমবার ট্রাম্প ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে “সম্পূর্ণ ও পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধবিরতি” কার্যকর হওয়ার কথা জানিয়ে এটিকে ‘১২ দিনের যুদ্ধের সমাপ্তি’ বলে অভিহিত করেন। তবে, এই ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ইসরায়েল-ইরান উত্তেজনা আবারও চরমে ওঠে।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ অভিযোগ করেন, ইরান যুদ্ধবিরতির শর্ত লঙ্ঘন করেছে। তিনি ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) কে তেহরানের লক্ষ্যস্থল ও সন্ত্রাসী অবকাঠামো ধ্বংসের নির্দেশ দেন। আইডিএফের বক্তব্য অনুযায়ী, ইরান থেকে ছোড়া দুটি ক্ষেপণাস্ত্র আকাশেই ধ্বংস করা হয়েছে। তবে ইরান এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে জানায়, তারা যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করেনি। ইরানের এক জ্যেষ্ঠ নিরাপত্তা কর্মকর্তা সতর্ক করে বলেন, “ইসরায়েল যদি কোনো ভুল করে, তাহলে দখলকৃত অঞ্চলগুলো আমাদের পাল্টা হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হবে।”
ট্রাম্পের ঘোষণায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় স্বস্তি প্রকাশ করলেও যুদ্ধবিরতির স্থায়িত্ব নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। কাতার এই চুক্তি বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখলেও সংঘাতের পুনরুত্থানের আশঙ্কা রয়ে গেছে। চীন আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেছে, তারা যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার প্রত্যাশা করে।
গত কয়েকদিনের ঘটনাপ্রবাহে সংঘাত আরও ঘনীভূত হয়েছিল। ট্রাম্পের নির্দেশে যুক্তরাষ্ট্র ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায়, যার জবাবে ইরান কাতারের আল উদেইদ বিমানঘাঁটির দিকে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে। কাতার তাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দিয়ে বেশিরভাগ ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করলেও একটি নির্জন এলাকায় পড়ে, তবে কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের ভবিষ্যৎ এখনও অনিশ্চিত। ইসরায়েলি বিরোধী দলীয় নেতা ইয়ার লাপিদ গাজায় যুদ্ধবিরতি ও বন্দিদের মুক্তির আহ্বান জানালেও, ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধে ইতিমধ্যে ৫৫ হাজারেরও বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। বিশ্ব এখন নজর রেখেছে মধ্যপ্রাচ্যের দিকে, যেখানে একটি ভুল পদক্ষেপ পুরো অঞ্চলকে আবারও যুদ্ধের আগুনে জ্বালিয়ে দিতে পারে।
মন্তব্য করুন