বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) শীর্ষ পদে বড়সড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত মিলেছে। বর্তমান সভাপতি ফারুক আহমেদ কি তাহলে স্বেচ্ছায় পদ ছাড়ছেন? নাকি তাকে সরে যেতে বলা হয়েছে—এই প্রশ্ন এখন ঘুরপাক খাচ্ছে দেশের ক্রীড়াঙ্গনে।
বিশ্বস্ত সূত্রের বরাত দিয়ে দেশের একটি গণমাধ্যম বলছে, বুধবার রাতে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়ার ধানমন্ডির বাসায় সাক্ষাৎ করেছেন বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ। ওই বৈঠকে ক্রীড়া উপদেষ্টা নাকি তাকে জানিয়ে দেন—বিসিবির নেতৃত্বে পরিবর্তন আনতে চায় সরকারপক্ষ।
তবে কেন এই সিদ্ধান্ত, সে ব্যাপারে কোনো সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা নাকি দেওয়া হয়নি ফারুককে। একই দৈনিককে দেওয়া এক সংক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়ায় তিনি বৈঠকের বিষয়টি নিশ্চিত করলেও আলোচনার বিস্তারিত জানাতে রাজি হননি।
এদিকে আইসিসির নীতিমালার কারণে সরাসরি সরকারি হস্তক্ষেপে বোর্ড পরিচালনায় পরিবর্তন আনা প্রায় অসম্ভব। বিসিবির সভাপতি নির্বাচিত পদ হওয়ায় ফারুককে সরাতে হলে তাকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করতে হবে—এমনটাই বলছেন বোর্ড সংশ্লিষ্টরা।
যদিও এনএসসি মনোনীত পরিচালক হিসেবে তার নিয়োগ বদলানো সম্ভব, কিন্তু নির্বাচিত সভাপতির পদ থেকে তাকে সরকার সরিয়ে দিতে পারবে কি না, তা নিয়ে রয়েছে আইনি জটিলতা।
সূত্র মতে ফারুক আহমেদ দুই দিনের সময় চেয়েছেন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাতে। তিনি যদি স্বেচ্ছায় সরে দাঁড়ান, তাহলে আইসিসির নিয়ম ভঙ্গের কোনো প্রশ্ন উঠবে না। পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিলে তা খুব দ্রুত কার্যকর হবে বলেও ধারণা করা হচ্ছে।
ক্রিকেটপাড়ায় জোড় গুঞ্জন, সাময়িকভাবে বিসিবির সভাপতির দায়িত্ব পেতে পারেন জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল ইসলাম বুলবুল। আগামী মাসে তার আইসিসি-সংক্রান্ত দায়িত্বের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। ফলে তাকে নিয়েই ভাবনা শুরু করেছে সরকার।
তবে বিসিবির বর্তমান গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, অন্তর্বর্তী কমিটি গঠন বা সরাসরি কাউকে সভাপতি নিয়োগের সুযোগ নেই। এসব কারণেই এখনো বিষয়টি পুরোপুরি অনিশ্চিত।
আরেকটি আলোচনায় বলা হচ্ছে, বিসিবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে আমিনুলের নামও আলোচনায় রয়েছে। তবে তিনি নাকি বর্তমান প্রধান নির্বাহীর দ্বিগুণ বেতন, অর্থাৎ প্রায় ১২ লাখ টাকা দাবি করেছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করা না গেলেও তার বেতন-সংক্রান্ত আলোচনা বিসিবির ভেতরে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
তবে ক্রীড়া উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনায় আমিনুল ইসলাম বুলবুল উপস্থিত ছিলেন না বলে একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে।
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে নেতৃত্বের এই অস্থিরতা কোথায় গিয়ে থামে, সেটিই এখন দেখার বিষয়। স্বেচ্ছায় পদত্যাগ না করলে পরিস্থিতি গড়াতে পারে জটিলতায়, যার প্রভাব পড়তে পারে দেশের ক্রিকেট কাঠামো ও আন্তর্জাতিক মর্যাদার ওপরও।
মন্তব্য করুন