হজ ফরজ হওয়ার পর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একবার হজ এবং চারবার ওমরা করেছেন। (তার হজটি ছিল হজে কিরান, এতে ওমরা ও হজ একসঙ্গে পালন করতে হয়)।
হজের অন্যতম এবং প্রথম আমল হল, ইহরাম বাঁধা। রাসুল (সা.) ইহরাম বাঁধেন মদিনার অদূরে যুল হুলাইফা নামক স্থানে। হাদিসের এসেছে, হজরত ইবনু ওমর (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রাসুল (সা.) যুল হুলাইফার মসজিদের কাছ থেকে ইহরাম বেঁধেছেন। ( বুখারি : ১৫৪১, মুসলিম : ১১৮৬)
আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেন, এই হচ্ছে তোমাদের ‘বায়দা’ যেখানে তোমরা রাসুলুল্লাহ (সা.) সম্পর্কে অনুমানে কথা বলছো। রাসুলুল্লাহ (সা.) যুল হুলাইফার মাসজিদ থেকেই ইহরাম বেঁধেছেন। (সুনানে আবি দাউদ : ১৭৭১)।
হজের আরেকটি বিশেষ আমল হল, তালবিয়া পাঠ করা। হজরত ইবনু ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি দেখেছি, আল্লাহর রাসুল (সা.) যুলহুলাইফা নামক স্থানে তার বাহনের উপর আরোহণ করেন, বাহনটি সোজা হয়ে দাঁড়াতেই তিনি তালবিয়া উচ্চারণ করতে থাকেন। (বুখারি : ১৫১৪)
রাসুল (সা.) উচ্চ স্বরে তালবিয়া পাঠ করতেন। সাহাবিদেরও পাঠ করতে বলতেন। তিনি বলেছেন, আমার কাছে জিবরাইল (আ.) এসে আমাকে বললেন যেন আমি আমার সাহাবিদের এবং আমার সঙ্গে থাকা সবাইকে উচ্চ স্বরে তালবিয়া পাঠের নির্দেশ দেই। (সুনানে আবি দাউদ : ১৮১৪)।
রাসুল (সা.) জামারায় কঙ্কর নিক্ষেপের আগ পর্যন্ত তালবিয়া পাঠ করতে থাকতেন। ফযল ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) বড় জামারায় পাথর নিক্ষেপের আগ পর্যন্ত তালবিয়া পড়তে থাকতেন। (সুনানে আবি দাউদ : ১৮১৫)
আরাফাহ থেকে মুযদালিফা পর্যন্ত একই বাহনে নবী (সা.)-এর পিছনে উসামা ইবনু যায়দ (রা.) উপবিষ্ট ছিলেন। এরপর মুযদালিফা থেকে মিনা পর্যন্ত ফযল (ইবনু আব্বাস (রা.)-কে তার পিছনে আরোহণ করান। ইবনু আব্বাস (রা.) বলেন, তারা উভয়ই বলেছেন, নবী (সা.) জামরা আকাবায় কঙ্কর নিক্ষেপ করা পর্যন্ত তালবিয়া পাঠ করছিলেন। ( বুখারি : ১৫৪৩, মুসলিম : ১২৮১, আহমাদ : ১–––৮৩১)
হজের অন্যতম আরেকটি আমল হল, পবিত্র কাবা ঘর তাওয়াফ করা। জিলহজের ৮ তারিখ সূর্যাস্তে রাসুল (সা.) মিনায় রওয়ানা হন এবং সেখানেই জোহর, আসর, মাগরিব ও এশা এবং পরদিন ফজর নামাজ আদায় করেন। পরদিন সকালে তিনি আরাফাতের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন।
রাসুল (সা.) নিজেও কাবার তাওয়াফ করেছেন।
হজরত ইবনু আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রাসুল (সা.) সাহাবিদেরকে নিয়ে মক্কা আগমণ করলে মুশরিকরা মন্তব্য করল, এমন একদল লোক আসছে যাদেরকে ইয়াসরিব-এর (মদিনার) জ্বর দুর্বল করে দিয়েছে (এ কথা শুনে) রাসুল (সা.) সাহাবিদেরকে তাওয়াফের প্রথম তিন চক্করে ‘রামল’ করতে (উভয় কাঁধ হেলে দুলে জোর কদমে চলতে) এবং উভয় রুকনের মধ্যবর্তী স্থানটুকু স্বাভাবিক গতিতে চলতে নির্দেশ দিলেন। সাহাবিদের প্রতি দয়াবশত সব ক’টি চক্করে রামল করতে আদেশ করেননি। ( বুখারি : ১৬০২, মুসলিম : ১২৬৬)
অন্য হাদিসে ইবনে ওমর (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) হাজরে আসওয়াদ থেকে পুনরায় হাজরে আসওয়াদ পর্যন্ত তিন চক্কর দ্রুত পদক্ষেপে আদায় করতেন। আর বাকি চার চক্কর স্বাভাবিকভাবে হেঁটে আদায় করতেন। (মুসলিম : ১২৬২)
মিনায় পাথর নিক্ষেপের পর ফরজ তাওয়াফ রাসুল (সা.) উটনীর উপর আরোহণ করে আদায় করেন। হাতের লাঠি দ্বারা হাজরে আসওয়াদ স্পর্শ করেন। যাতে মানুষ তাকে ভালোভাবে দেখতে পারে। আর তিনি উঁচুতে ছিলেন। যাতে মানুষ তাকে মাসআলা জিজ্ঞেস করতে পারে। কেননা, তিনি তখন লোকদের বেষ্টনীর মধ্যে ছিলেন। (মুসলিম : ২৯৪০)।
সাফা-মারওয়ায় সাঈ করা হজের গুরুত্বপূর্ণ একটি আমল। জাবের (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) সাফার কাছাকাছি হয়ে কোরআনের আয়াত তেলাওয়াত করলেন, নিশ্চয়ই সাফা এবং মারওয়া আল্লাহর নিদর্শনের অন্তর্ভুক্ত। (সুরা বাকারা : ১৫৮)।
এরপর বললেন, মহান আল্লাহ যার কথা প্রথমে বলেছেন, আমরাও প্রথমে এর সাঈ করব। এ কথা বলে তিনি সাফা পাহাড়ে আরোহণ করলেন। সেখান থেকে কাবা শরিফের দিকে মুখ করে আল্লাহর একত্ব ও মাহাত্ম্য ঘোষণা করলেন। এবং বললেন, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকা লাহু, লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শাইইন কাদির। লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু, আনজাযা ওয়াদাহু ও নাসারা আবদাহু, ওয়া হাযামার আহযাবা ওয়াহদাহু।
(অর্থ : আল্লাহ ছাড়া কোনো মাবুদ নেই। তিনি এক; তার কোনো শরিক নেই। তার জন্য রাজত্ব এবং তার জন্যই সব প্রশংসা। তিনি প্রতিটি জিনিসের ওপর শক্তিমান। আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই। তিনি এক। তিনি নিজের প্রতিশ্রুতি পূর্ণ করেছেন। তাঁর বান্দাকে সাহায্য করেছেন। শত্রু বাহিনীকে একাই পরাস্ত করেছেন)।
তিনি এ দোয়া তিনবার পড়লেন। এর পর সেখান থেকে নেমে মারওয়া পাহাড়ের দিকে গেলেন। সমতল ভূমিতে অবতরণ করে (বাতনে বাসিল নামক স্থানে, যা বর্তমানে সবুজ বাতি দ্বারা চিহ্নিত করা) উপত্যকা অতিক্রম করা পর্যন্ত দ্রুত গতিতে চললেন। এরপর মারওয়া পাহাড়ে হেঁটে উপরে চড়লেন। অতঃপর এখানেও তাই করলেন সাফা পাহাড়ে যা করেছিলেন। (মুসলিম : ২৮২১)
জাবের (রা.) বলেন, তারবিয়ার দিন (৮ জিলহজ) রাসুল (সা.) তার বাহনে আরোহণ করে মিনায় জোহর, আসর, মাগরিব, এশা ও ফজরের সালাত আদায় করতেন। সূর্য ওঠা পর্যন্ত সেখানে অপেক্ষা করতেন। নামিরা নামক স্থানে গিয়ে তার জন্য একটি তাঁবু স্থাপনের নির্দেশ দিতেন। আরাফার দিকে রওয়ানা হয়ে যেতেন। কুরাইশরা মনে করত, রাসুল (সা.) মাশআরুল হারামের কাছে অবস্থান করবেন, যেখানে জাহেলি যুগে কুরাইশরা অবস্থান করত। কিন্তু তিনি সামনে এগিয়ে আরাফায় পৌঁছান। দেখতে পান নামিরায় তার জন্য তাঁবু খাটানো হয়েছে। তিনি এখানে অবতরণ করলেন। তারপর যখন সূর্য ঢলে পড়ল, তখন তিনি তার কাসওয়া নামক উটনীকে প্রস্তুত করার নির্দেশ দিলেন। তার পিঠে হাওদা লাগানো হল। তখন তিনি বাতনে ওয়াদিতে এলেন। লোকদের উদ্দেশে (বিদায় হজের ঐতিহাসিক) ভাষণ দিলেন। (ভাষণের পর আজান দেওয়া হল এবং ইকামত দিয়ে জোহর পড়লেন। এরপর আবার ইকামত দিয়ে আসর পড়লেন। এ দুই নামাজের মাঝে অন্য কোনো নামাজ পড়েননি। সূর্যাস্ত পর্যন্ত এভাবে অবস্থান করলেন। হলদে আভা কিছু দূর হয়ে যখন সূযের্র গোলক সম্পূর্ণ অদৃশ্য হল তখন তিনি উসামা (রা.)-কে তার বাহনের পেছন দিকে বসিয়ে মুজদালিফার উদ্দেশে যাত্রা করলেন। (মুসলিম : ২৮২১)
হজরত উরওয়া ইবনে মাদাররিস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহকে (সা.) মুযদালিফায় অবস্থানরত অবস্থায় দেখেছি। তিনি বলেন, যে ব্যক্তি এখানে আমাদের সঙ্গে এই সালাত আদায় করেছে, আমাদের সঙ্গে এখানে অবস্থান করেছে এবং এর আগের দিনে অথবা রাতে আরাফায় অবস্থান করেছে তার হজ পূর্ণ হয়েছে। (নাসায়ি : ৩০৩৯)
আল-মুবারকপুরীর মতে, আরাফায় অবস্থানের সময় সুরা আল-মায়েদা-এর ৩ নম্বর আয়াত নাজিল হয়েছিল। এই আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীন পরিপূর্ণ করে দিলাম, তোমাদের প্রতি আমার অনুগ্রহ সম্পন্ন করে দিলাম এবং ইসলামকে তোমাদের জন্য জীবনব্যবস্থা হিসেবে পছন্দ করলাম।’
৯ তারিখ সূর্যাস্তের পর রাসুল (সা.) মুযদালিফায় পৌঁছান এবং সেখানে মাগরিব ও এশা নামাজ আদায় করেন। রাতটি সেখানে কাটিয়ে তিনি ফজরের সময় নামাজ ও দোয়া করেন। সকাল বেলা তিনি মিনায় ফিরে আসেন এবং রামি জামার রীতির অংশ হিসেবে প্রতিটি জামরায় পাথর নিক্ষেপ করেন এবং প্রত্যেকবার তাকবির বলেন।
হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, জাবের (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) মুজদালিফায় পৌঁছে একই আজানে ও দুই ইকামতে মাগরিব ও এশার নামাজ আদায় করলেন। এ দুই নামাজের মাঝে অন্য কোনো নফল নামাজ আদায় করেননি। এরপর রাসুল (সা.) ফজর পর্যন্ত ঘুমালেন। ভোর হয়ে গেলে তিনি আজান ও ইকামতসহ ফজরের নামাজ আদায় করলেন। অতঃপর কাসওয়া বাহনের পিঠে আরোহণ করে মাশআরুল হারাম নামক স্থানে এলেন। এখানে তিনি কেবলামুখী হয়ে আল্লাহর কাছে দোয়া করলেন। তার মাহাত্ম্য বর্ণনা করলেন। কালেমায়ে তাওহিদ পড়লেন। তার একত্ব ঘোষণা করলেন। দিনের আলো উজ্জ্বল না হওয়া পর্যন্ত তিনি এভাবেই কাটিয়ে দিলেন। (মুসলিম : ২৮২১)
উসামাহ ইবনু যায়দ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রাসুল (সা.) আরাফার ময়দান থেকে রওনা হলেন এবং উপত্যকায় পৌঁছে নেমে তিনি পেশাব করলেন। এরপর অজু করলেন, কিন্তু ভালোভাবে অজু করলেন না। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! সালাত আদায় করবেন কি? তিনি বললেন, সালাতের স্থান তোমার সামনে। এরপর তিনি আবার সওয়ার হলেন। এবং মুযদালিফায় এসে সাওয়ারী থেকে নেমে অজু করলেন। এবার পূর্ণরূপে অজু করলেন। তখন সালাতের জন্য ইকামত দেওয়া হল। তিনি মাগরিবের সালাত আদায় করলেন। অতঃপর সবাই তাদের অবতরণস্থলে নিজ নিজ উট বসিয়ে দিল। পুনরায় এশার ইকামত দেওয়া হল। এরপর তিনি এশার সালাত আদায় করলেন এবং উভয় সালাতের মধ্যে অন্য কোন সালাত আদায় করলেন না। (বুখারি : ১৩৯)
এরপর তিনি তার সঙ্গে আনা কোরবানির পশুর তেষট্টিটি উট কোরবানি করলেন। বাকিগুলো জবাইয়ের নির্দেশ দেন। তিনি ও তার সাহাবিরা সেই গোশত অল্প পরিমাণে আহার করেন এবং বাকিটা দান করেন। এরপর তিনি আবার মক্কায় ফিরে যান, সেখানে আরেকবার তাওয়াফ করেন এবং জোহর নামাজ আদায় করেন। তিনি পুনরায় যমযমের পানি পান করেন এবং সেদিনই মিনায় ফিরে যান ও পুনরায় রামি জামার সম্পন্ন করেন।
হজরত আনাস ইবনু মালিক রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বললেন, এরপর রাসুল (সা.) মিনায় আসতেন। জামরায় এসে পাথর নিক্ষেপ করতেন। অতঃপর তিনি মিনায় নিজ স্থানে ফিরে এসে কোরবানি করতেন। হাজ্জাম (ক্ষৌরকার)-কে ইশারায় বলতেন, প্রথমে ডান পাশ, পরে বাম পাশ মুণ্ডন করো। অতঃপর তিনি লোকদের নিজের চুল দান করতেন। (মুসলিম : ৩০৪৩)।
রাসুল (সা.) কোরবানির দিন সূর্য হেলে যাওয়ার আগে এবং কোরবানির পরবর্তী তিন দিন—১১, ১২ ও ১৩ জিলহজ—যা ‘আয়্যামে তাশরীক’ নামে পরিচিত, তিনি মিনায় কাটান এবং সূর্য হেলে যাওয়ার পর শয়তানকে কঙ্কর নিক্ষেপ অব্যাহত রাখেন। প্রথমে ছোট জামরায়, এরপর মাঝারিটায় এবং সবশেষে জামরায়ে আকাবা (বড়)-তে কঙ্কর নিক্ষেপ করতেন।
জাবের (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) কোরবানির দিন সূর্য হেলে যাওয়ার আগে এবং কোরবানির পরের তিন দিন সূর্য হেলে যাওয়ার পর কঙ্কর নিক্ষেপ করতেন। (মুসলিম : ১২৯৭)।
ইমাম জুহরি (রহ.) বলেন, রাসুল (সা.) মসজিদে মিনার দিক থেকে প্রথমে অবস্থিত জামারায় সাতটি কঙ্কর নিক্ষেপ করতেন। প্রতিটি কঙ্কর মারার সময় তিনি তাকবির বলতেন। এরপর সামনে এগিয়ে কেবলামুখী হয়ে দাঁড়িয়ে হাত তুলে দোয়া করতেন। এখানে অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতেন। এরপর দ্বিতীয় জামারায় এসে সাতটি কঙ্কর মারতেন। প্রতিটি কঙ্কর মারার সময় তাকবির বলতেন। অতঃপর বাঁ-দিকে মোড় নিয়ে ওয়াদির কাছে এসে কেবলামুখী হয়ে দাঁড়াতেন। হাত তুলে দোয়া করতেন। অবশেষে আকাবার কাছে জামারায় এসে তিনি সাতটি কঙ্কর মারতেন। প্রতিটি কঙ্কর মারার সময় তাকবির বলতেন। এর পর ফিরে যেতেন। এখানে বিলম্ব করতেন না। (বুখারি : ১৭৫৩)
রাসুল (সা.) কোরবানির দিন মিনা থেকে মক্কায় এসে তাওয়াফে জেয়ারত তথা মূল তাওয়াফ আদায় করতেন। আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) কোরবানির দিন মিনা থেকে মক্কায় এসে তাওয়াফে জিয়ারত তথা মূল তাওয়াফ আদায় করতেন। এরপর মিনায় গিয়ে জোহর আদায় করতেন। (মুসলিম : ১৩০৮)।
মন্তব্য করুন