বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রংপুর জেলা কমিটির প্রধান সংগঠক (১ নম্বর সংগঠক) পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন তৌফিক আহমেদ হৃদয়। রোববার (২৫ মে) রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক দীর্ঘ স্ট্যাটাসে তিনি এ ঘোষণা দেন। তার পদত্যাগের পেছনে মূল কারণ হিসেবে সংগঠনের অভ্যন্তরে চাঁদাবাজি, দালালচক্রের দাপট ও নেতৃত্বে স্বচ্ছতার অভাবের অভিযোগ তুলে ধরেন।
তৌফিক আহমেদ হৃদয় লিখেছেন, “আজ আমি তীব্র ক্ষোভ ও গভীর ঘৃণা নিয়ে, বিবেকের কাছে দায়বদ্ধ হয়ে পদত্যাগ করছি। যেন কেউ না ভাবে আমরা সবাই নীরব ছিলাম। আজ ইতিহাসের কাছে দায়বদ্ধতা থেকে আমার এই সিদ্ধান্ত।”
তার অভিযোগ, আন্দোলনের রক্ত ও ত্যাগ দিয়ে প্রতিষ্ঠিত সংগঠনটি এখন একটি সুবিধাবাদী গোষ্ঠীর দখলে চলে গেছে। যারা প্রকৃত আন্দোলনে যুক্ত ছিলেন না, এমন কিছু ব্যক্তি হঠাৎ করে নেতৃত্বের আসনে বসে পড়েছেন, যাদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা ও অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ রয়েছে। সংগঠনের নিয়ম অনুযায়ী কোনো রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা গ্রহণযোগ্য না হলেও তা উপেক্ষিত হয়েছে।
স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন, “যারা আন্দোলনের রক্ত দিয়ে কেনা ব্যানারকে মামলা বাণিজ্য, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, সরকারি অফিসে দালালি ও ক্ষমতা দখলের সিঁড়ি বানিয়েছে, তাদের বিচার একদিন হবেই ইনশাআল্লাহ।”
পদত্যাগের পেছনে তিনটি প্রধান কারণ উল্লেখ করেন তিনি:
১. শহীদ ও আহতদের রক্তের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা;
২. সংগঠনের অভ্যন্তরে অনিয়ম ও দালালদের দাপটের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপের অভাব;
৩. কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নজরদারির ঘাটতি।
তিনি আরও বলেন, “যারা শহীদের রক্তকে বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে, তাদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত ‘জুলাই’ চলবে। আমরা জান দেব, জুলাই দেব না।”
এ বিষয়ে সংগঠনের রংপুর জেলা কমিটির ম্যাসেঞ্জার গ্রুপে কমিটির আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবের প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হলেও কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, এর আগেও সংগঠনটির জেলা ও মহানগর পর্যায়ের একাধিক নেতাকর্মী অর্থনৈতিক লেনদেন, মামলা বাণিজ্য ও রাজনৈতিক অপব্যবহারের অভিযোগ এনে পদত্যাগ করেছেন।
মন্তব্য করুন