ঈদের আগেই আসছে নতুন ডিজাইনের নোট, থাকছে ঐতিহ্য-সংস্কৃতির ছোঁয়া
নতুন নকশার টাকার নোট বাজারে আসছে শিগগিরই। ঈদুল আযহার আগেই চালু হচ্ছে একাধিক নতুন ডিজাইনের ব্যাংকনোট। এসব নোটে থাকছে না জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি। বরং এতে ফুটে উঠবে শহীদদের আত্মত্যাগ, তারুণ্যের প্রতীক, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং বাংলাদেশের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, আগামী ২৭ মে বাজারে আসছে নতুন ২০ টাকার নোট। এতে থাকবে কান্তজিউ মন্দির ও একটি প্রাচীন বৌদ্ধমন্দিরের চিত্র। এরপর ২৯ বা ৩০ মে আসবে ৫০ টাকার নোট, যাতে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের দুর্ভিক্ষের চিত্র এবং আতিয়া মসজিদের ছবি থাকবে। ১ জুন বাজারে আসবে ১০০০ টাকার নোট, যাতে ফুটে উঠবে বঙ্গভবন ও জাতীয় স্মৃতিসৌধের নকশা।
ঈদের পর বাজারে আসবে ৫ টাকার নোট, যাতে থাকবে আবু সাঈদ ও মুগ্ধের অবয়ব। ইউরোপ থেকে কাগজ সরবরাহে বিলম্বের কারণে এই নোটটি কিছুটা দেরিতে আসছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খান বলেন, “নতুন নোটগুলোর ডিজাইন ইতোমধ্যেই চূড়ান্ত হয়েছে। কিছু নোটের ছাপার কাজ শুরু হয়ে গেছে। এবারের নোটগুলোর ডিজাইনে মানুষের ছবি পুরোপুরি থাকছে না। তবে নোটে থাকছে শহীদদের স্মৃতি, তরুণ প্রজন্মের প্রতীক, সুন্দরবনের সৌন্দর্য এবং জাতির ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি।”
নতুন নোটে আরও যেসব বিষয় থাকছে, তা হলো:
৫ টাকার নোটে: আবু সাঈদ ও মুগ্ধদের অবয়ব
১০ টাকার নোটে: জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম ও তারুণ্যের ঐক্যের প্রতীক
১০০ টাকার নোটে: সুন্দরবনের চিত্রা হরিণ ও রয়েল বেঙ্গল টাইগারের চিত্র
২০০ টাকার নোটে: ধর্মীয় বৈচিত্র্যের প্রতীকরূপে মসজিদ, মন্দির, গির্জা ও প্যাগোডা
৫০০ টাকার নোটে: ঐতিহাসিক আহসান মঞ্জিলের ছবি
বাংলাদেশ ব্যাংকের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, গত বছর আগস্টে মাত্র ১৫ দিনের মধ্যে নোটের ডিজাইন চূড়ান্ত করার প্রস্তাব থাকলেও তা বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি। কারণ নোট ছাপার কাজে কাগজ, নিরাপত্তা উপকরণ ও নকশার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণ এবং দরপত্রসহ নানা জটিল প্রক্রিয়া জড়িত, যা সম্পন্ন করতে সাধারণত ৫-৭ মাস সময় লাগে।
উল্লেখ্য, ১৯৭২ সালের ৪ মার্চ বাংলাদেশের প্রথম কাগুজে নোট বাজারে আসে। ১ টাকার ওই নোটে ছিল বাংলাদেশের মানচিত্র। এরপর বিভিন্ন সময় চালু হয় ৫, ১০, ২০, ৫০, ১০০, ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট। সর্বশেষ ২০২০ সালে বাজারে আসে ২০০ টাকার ব্যাংকনোট।
নতুন ডিজাইনের এসব নোটে জাতীয় ইতিহাস, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের সম্মিলিত প্রতিফলন দেখা যাবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
মন্তব্য করুন