আবারও ইতিহাস গড়ল বিটকয়েন। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে সর্বশেষ যে উচ্চতায় পৌঁছেছিল, তা পেরিয়ে বৃহস্পতিবার বিটকয়েনের মূল্য এক লাখ ডলারের মনস্তাত্ত্বিক সীমা অতিক্রম করেছে।
বিশ্লেষকদের মতে, এই ঊর্ধ্বগতির পেছনে মূল কারণ হলো যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে নতুন বাণিজ্য চুক্তির সম্ভাবনা। পাশাপাশি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের চলমান বাণিজ্যযুদ্ধ শিথিল হওয়ার সম্ভাবনাও বিটকয়েনের মূল্যবৃদ্ধিতে বড় ভূমিকা রাখছে।
বৃহস্পতিবার দুপুর নাগাদ বিটকয়েনের মূল্য দাঁড়ায় ১০১,৩২৯.৯৭ ডলার, যা দিনের হিসেবে ৪.৭ শতাংশ বৃদ্ধি। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে বিটকয়েন প্রথমবারের মতো এক লাখ ডলারের সীমা অতিক্রম করে। তবে এটি এখনো জানুয়ারিতে অর্জিত সর্বোচ্চ ১০৯,০০০ ডলার রেকর্ডের নিচে রয়েছে।
কয়েনহাউসের বিশ্লেষক স্তেফান ইফরাহ বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র এখন অনেক বেশি বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ নিচ্ছে এবং অন্যান্য দেশের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তিতে পৌঁছাচ্ছে। এ কারণেই ক্রিপ্টোকারেন্সির বাজারে ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে।”
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার নির্বাচনী প্রচারে ক্রিপ্টোকারেন্সিকে সমর্থনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তবে বিশ্বব্যাপী শুল্ক আরোপের কারণে বাজারে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। যদিও তা সরাসরি ক্রিপ্টোকারেন্সিকে প্রভাবিত করেনি, তবে বিনিয়োগকারীরা নিরাপদ সম্পদের দিকে ঝুঁকে পড়লে বিটকয়েনের দাম কমে যায়।
সম্প্রতি আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট হ্যাভিয়ের মিলেইর সমর্থিত $LIBRA ক্রিপ্টোকারেন্সি বিশাল ধাক্কা খায়। প্রাথমিক বিনিয়োগকারীরা লাভ নিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার পর এর দাম দ্রুত পড়ে যায়। ফলে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হন।
এ ঘটনায় আর্জেন্টিনার প্রসিকিউটররা এখন খতিয়ে দেখছেন, মিলেই $LIBRA প্রচারে কোনো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন কিনা।
২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে দুবাই-ভিত্তিক ক্রিপ্টো এক্সচেঞ্জ Bybit-এর ১.৫ বিলিয়ন ডলার মূল্যের ডিজিটাল সম্পদ চুরি হয়ে যায়। এটি ক্রিপ্টো ইতিহাসের সবচেয়ে বড় চুরি হিসেবে ধরা হচ্ছে। এই ঘটনায় এপ্রিলের শুরুতে বিটকয়েনের দাম এক পর্যায়ে নেমে আসে ৭৫ হাজার ডলারে।
ক্রিপ্টো বিশ্লেষক চার্লি মরিস বলেন, “বর্তমানে বাজার যেমন শক্তিশালী, বিটকয়েনও তেমন। যুক্তরাজ্যের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এর পর আরও অনেক চুক্তি আসার সম্ভাবনা রয়েছে।”
এদিকে, এপ্রিলের শেষ দিকে যুক্তরাজ্য সরকার ক্রিপ্টোকারেন্সি নিয়ন্ত্রণে খসড়া আইন প্রকাশ করেছে। এটি ইউরোপীয় ইউনিয়নের গৃহীত কাঠামোর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ বলে জানা গেছে।
মন্তব্য করুন