রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের আমন্ত্রণে রাশিয়া সফরে যাচ্ছেন চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। আগামী ৭ থেকে ১০ মে পর্যন্ত এই সফরকালে তিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নাৎসি জার্মানির বিরুদ্ধে বিজয় উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন।
রোববার (৪ মে) এএফপির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, সফরের অংশ হিসেবে প্রেসিডেন্ট শি পুতিনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে অংশ নেবেন। আলোচনায় চীন-রাশিয়া কৌশলগত সম্পর্ক আরও জোরদার করা, আঞ্চলিক নিরাপত্তা এবং বৈশ্বিক বিভিন্ন ইস্যু অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
চীনা প্রেসিডেন্টের এই সফর এমন সময় হচ্ছে, যখন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বেইজিংয়ের সম্পর্ক উত্তেজনাপূর্ণ হয়ে উঠেছে, বিশেষত মার্কিন শুল্ক বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে। অন্যদিকে, ইউক্রেনে তিনদিনের যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন পুতিন, যা ৮ থেকে ১০ মে ‘বিজয় দিবস’ উপলক্ষে কার্যকর থাকবে। তবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এই উদ্যোগকে ‘নাটক’ হিসেবে উড়িয়ে দিয়েছেন।
চীন ও রাশিয়া ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে আগ্রাসনের আগ মুহূর্তে ‘সীমাহীন অংশীদারিত্ব’ ঘোষণা করে। এরপর থেকে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক ও সামরিক সহযোগিতা নাটকীয়ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে, যা পশ্চিমা বিশ্বের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।
রোববার চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র বলেন, “আন্তর্জাতিক অর্ডারে বড় ধরনের পরিবর্তন চলছে। এই প্রেক্ষাপটে রাশিয়া ও চীনের ঐতিহাসিক ও কৌশলগত সম্পর্ক আরও গভীর হচ্ছে।” চীনা রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম সিসিটিভিকে তিনি আরও বলেন, “জাতিসংঘ, এসসিও ও ব্রিকসের মতো প্ল্যাটফর্মে দুই দেশ ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা জোরদার করবে এবং ‘গ্লোবাল সাউথ’-কে ঐক্যবদ্ধ করে একতরফা দখলদার মানসিকতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে।”
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চীন থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর সর্বোচ্চ ১৪৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করেছেন। পাল্টা জবাবে চীনও যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ওপর ১২৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক বসিয়েছে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রসঙ্গ টেনে চীনা মুখপাত্র বলেন, “এশিয়া ও ইউরোপে যুদ্ধের প্রধান দুটি ফ্রন্ট ছিল চীন ও রাশিয়া। নাৎসিবিরোধী যুদ্ধে বিজয়ে এই দুই দেশ বিপুল ত্যাগ স্বীকার করেছে।”
রুশ বিজয় দিবস উপলক্ষে ৯ মে মস্কোর রেড স্কয়ারে আয়োজিত সামরিক কুচকাওয়াজে রাশিয়ার ঐতিহ্যগত মিত্র দেশগুলোর নেতারাও উপস্থিত থাকবেন বলে জানা গেছে।
মন্তব্য করুন