ইসলামের দৃষ্টিতে জুমার দিন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও বরকতময়। একে সাপ্তাহিক ঈদের দিন বলা হয়েছে। এই দিনটির গুরুত্ব এত বেশি যে, কুরআনে ‘জুমা’ নামে একটি স্বতন্ত্র সুরা নাজিল হয়েছে। ইসলামি ইতিহাসেও জুমার দিন বহু গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটেছে। তাই এই দিনটিকে সম্মান ও গুরুত্বসহকারে পালন করা প্রত্যেক মুসলিমের দায়িত্ব।
জুমার দিনের মর্যাদা রক্ষা করতে গিয়ে কিছু সাধারণ ভুল এড়িয়ে চলা জরুরি। নিচে এমন ৩টি ভুল তুলে ধরা হলো, যেগুলো থেকে বিরত থাকা উচিত:
জুমার নামাজে যাওয়ার আগে গোসল করাটা ইসলামি শিক্ষার অংশ। অনেকেই তাড়াহুড়া করে শুধু ফরজ নামাজ পড়ে চলে আসেন, অথচ রাসুলুল্লাহ (সা.) স্পষ্টভাবে বলেছেন:
“জুমার দিন প্রত্যেক প্রাপ্ত বয়স্ক মুসলিমের জন্য গোসল করা ওয়াজিব। মিসওয়াক করবে এবং সম্ভব হলে সুগন্ধি ব্যবহার করবে।”
(বুখারি: ৮৮০, মুসলিম: ৮৪৬)
এছাড়াও রাসুল (সা.) জুমার দিনে পরিচ্ছন্ন পোশাক পরিধান করতেন। অতএব, শুধু নামাজ নয়, বরং গোসল, সুগন্ধি ব্যবহার ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখাও জুমার মর্যাদার অংশ।
জুমার নামাজের পূর্বে খুতবা শুনা ফরজ। কিন্তু অনেকেই কেবল নামাজের সময় এসে পৌঁছান, যা সঠিক নয়। রাসুল (সা.) একটি হাদিসে পাঁচটি সময়সীমা অনুযায়ী আগমনের ফজিলত ব্যাখ্যা করেছেন:
প্রথমে আসা মানে একটি উট কুরবানি করার সমতুল্য, দ্বিতীয় পর্যায়ে গাভী, তৃতীয় পর্যায়ে শিংওয়ালা দুম্বা, চতুর্থ পর্যায়ে মুরগি এবং পঞ্চম পর্যায়ে ডিম কুরবানির সমতুল্য সওয়াব পাওয়া যায়।
(বুখারি: ৮৮১)
অতএব, খুতবা মিস না করে আগেভাগেই মসজিদে পৌঁছানো উচিত।
জুমার আজান হওয়ার পর দুনিয়াবি কাজ-কর্ম চালিয়ে যাওয়া ইসলামী শিক্ষার পরিপন্থী। আল্লাহ কুরআনে বলেন:
“হে মুমিনগণ! জুমার দিন যখন নামাজের আহ্বান জানানো হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণে এগিয়ে যাও এবং বেচা-কেনা বন্ধ করে দাও। এটি তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা জানতে।”
(সূরা জুমা, আয়াত: ৯)
নবী করিম (সা.) বলেন, জুমার দিন এমন একটি সময় রয়েছে, যখন বান্দা আল্লাহর কাছে যা চায়, আল্লাহ তা কবুল করেন— যদি সে নামাজরত থাকে।
(বুখারি: ৬৪০০)
জুমার দিন কেবল নামাজ আদায়ের দিন নয়, বরং আত্মশুদ্ধি, দোয়া, ইবাদত এবং ইসলামী শিষ্টাচার পালনের একটি বিশেষ সুযোগ। এই দিনটিকে গুরুত্ব দিয়ে পালন করলে আমরা আল্লাহর অপার রহমত ও বরকতে ভরপুর হতে পারি।
মন্তব্য করুন