পবিত্র রমজান মাসে ইফতারের সময় খেজুর খাওয়ার প্রচলন বহুদিনের। বিশেষত মরক্কোসহ মুসলিম বিশ্বজুড়ে এটি অত্যন্ত জনপ্রিয়। খেজুরের মিষ্টি স্বাদ ও অসংখ্য স্বাস্থ্য উপকারিতার কারণে এটি শুধু রমজানেই নয়, সারা বছরই স্বাস্থ্যসচেতন মানুষের খাদ্যতালিকায় থাকা উচিত।
বিশ্বে প্রায় ৩০০ প্রকারের খেজুর পাওয়া যায়, যার প্রতিটির স্বাদ ও গঠন আলাদা। বিশেষজ্ঞরা রমজানে খেজুর খাওয়ার সাতটি প্রধান স্বাস্থ্যগত সুবিধার কথা তুলে ধরেছেন।
খেজুর প্রাকৃতিক কার্বোহাইড্রেটে সমৃদ্ধ, যেখানে ডেক্সট্রোজ, ফ্রুক্টোজ ও সুক্রোজ রয়েছে। এগুলো শরীরের জন্য দ্রুত শক্তির যোগান দেয়, যা সারাদিন রোজা রাখার পর শক্তি ও প্রাণশক্তি পুনরুদ্ধারে সাহায্য করে।
খেজুরে রয়েছে পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস ও ক্যালসিয়ামের মতো গুরুত্বপূর্ণ খনিজ উপাদান। এসব খনিজ শরীরের কোষগুলোকে হাইড্রেট করে, ক্লান্তি দূর করে এবং কার্বোহাইড্রেট ও প্রোটিনের সঠিক বিপাকে সহায়তা করে। এছাড়া, এগুলো স্নায়ুতন্ত্র ও পেশীর কার্যকারিতা উন্নত করতে সাহায্য করে।
খেজুর গ্লাইসিন, আর্জিনিন ও ভ্যালিনের মতো অ্যামিনো অ্যাসিড সমৃদ্ধ, যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে ভূমিকা রাখে।
খেজুরে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে, যা শরীরে চর্বি জমা প্রতিরোধ করে এবং অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমিয়ে বিভিন্ন রোগ থেকে রক্ষা করে। এটি কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে, কোষের বার্ধক্য প্রতিরোধ করে এবং ক্যান্সারের ঝুঁকি হ্রাস করে।
খেজুরে প্রচুর ফাইবার থাকে, যা হজমক্রিয়া সহজ করে, কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করে এবং কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। বিশেষত রোজার সময় এটি হজমপ্রক্রিয়া স্বাভাবিক রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
যদিও খেজুরে প্রাকৃতিক শর্করা বেশি, এটি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতেও সহায়ক। তবে ডায়াবেটিস রোগীদের পরিমিত পরিমাণে খেজুর খাওয়া উচিত।
খেজুরে ভিটামিন সি, ই, বি২, বি৩, বি৫, বি৬ এবং কে রয়েছে। এসব ভিটামিন মস্তিষ্কের কার্যকারিতা উন্নত করে, হৃদরোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে এবং ত্বকের স্বাস্থ্য রক্ষা করে। বিশেষত, ভিটামিন কে রক্ত জমাট বাঁধতে এবং বি৩ খাবার থেকে শক্তি উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
খেজুর রক্তাল্পতা দূর করতে সহায়ক এবং সার্বিক স্বাস্থ্যের উন্নতিতে কার্যকর। তাই পবিত্র রমজানসহ প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় খেজুর রাখা যেতে পারে।
তথ্যসূত্র: সামা টিভি
মন্তব্য করুন