দূর থেকে দেখলে চোখ ধাঁধিয়ে যাবে—নদীতে ছুটে চলছে আধুনিক মডেলের একটি প্রাইভেট কার গাড়ি। কিন্তু এটি আসলে এক অভিনব স্পিডবোট, যা বানিয়েছেন গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার ব্রক্ষপুত্র নদী পাড়ের বাসিন্দা দশম শ্রেীণির স্কুল পড়ুয়া শিক্ষার্থী তরুণ উদ্ভাবক রাহাদ মিয়া।
অদ্ভুত এই যান দেখতে প্রতিদিন ভিড় করছেন আশপাশের গ্রাম থেকে শুরু করে দূর-দূরান্তের দর্শনার্থীরা। কেউ বলছেন সিনেমার দৃশ্যের মতো, কেউ আবার বিশ্বাসই করতে পারছেন না নদীতে চলছে গাড়ি। ফেসবুকসহ বিভিন্ন সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নদীতে প্রাইভেট কার গাড়ি ছুটে চলার দৃশ্য দেখে মুগ্ধ হয়ে বাস্তবে দেখতে প্রতিদিন নদী পাড়ে ভীর করছেন উৎসুক মানুষ।
স্থানীয়রা বলছেন—এমন উদ্যোগ তরুণদের উদ্ভাবনী ক্ষমতাকে উৎসাহ দেবে, পাশাপাশি নদী, চরাঞ্চলসহ গ্রামীণ যোগাযোগ ব্যবস্থায় যুক্ত করবে এক নতুন মাত্রা।
ল্যাম্বরগিনি আকৃতির গাড়িটিতে এক সাথে ৫ জন বসতে পারবে। বসার জন্য রয়েছে ৫টি সিট। ঘন্টায় ১০ কিলোমিটার গতিতে চলবে। প্রতি ঘন্টায় লাগবে ২ লিটার জ্বালানি তেল। সাধারণ স্পিডবোটের তুলনায় একটু উঁচু হওয়ায় পানি উঠা বা ডোবার সম্ভবনা খুবই কম। নিরাপত্তার জন্য রয়েছে লাইটিং সিস্টেমসহ ইমারজেন্সি সিগনাল ও উচ্চ সাউন্ডের সাইরেন।
তরুন উদ্ভাবক রাহাদ মিয়া জানান, ল্যাম্বরগিনি আকৃতির স্পিডবোটটি বর্ষায় চলবে নদীতে, আর ভবিষ্যতে শুকনো মৌসুমে রাস্তায় চালানোর পরিকল্পনাও রয়েছে তার। এজন্য যোগ করা হবে বিশেষ চাকা ও গিয়ার সিস্টেম। তবে বর্তমানে এটি কেবল নদীতে চলাচল করছে।
ফুলছড়ি উপজেলার রতনপুর গ্রামের ইদ্রিস আলী জানান, গাড়িটি শুধু দেখতেই সুন্দর না এটি যোগাযোগ ব্যবস্থায় ব্যাপক পরিবর্তন আনতে পারে। গাড়িটি দেখতে প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ আসছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা গোলাম মওলা জানান, দরিদ্র পরিবারের ছেলে রাহাদ ধার দেনা করে গাড়িটি বানিয়েছেন। তাকে সরকারি-বেসরকারি সহযোগিতা করা গেলে সে দেশের জন্য অনেক কিছু করতে পারবে।
গ্রামীণ জীবনকে বদলে দেওয়ার স্বপ্ন নিয়ে এগিয়ে চলেছে এই তরুণ। তার এই ব্যতিক্রমী উদ্ভাবনের পাশাপাশি সে তৈরি করেছে ফায়ার ফাইটার রোবট, ওয়াল ক্লাইমবার রোবটসহ বিভিন্ন কিছু। তরুন উদ্ভাবক রাহাদ মিয়া ফুলছড়ি উপজেলার রতনপুর গ্রামের শফিকুল ইসলামের ছেলে। সে পাশ্ববর্তি গুনভড়ি স্কুলে দশম শ্রেণীতে বিজ্ঞান বিভাগে পড়ালেখা করছে।
মন্তব্য করুন