নামাজ হলো আল্লাহর সাথে বান্দার সরাসরি সম্পর্ক স্থাপনের একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। নামাজের সময় মুমিনের উচিত দুনিয়ার সব ভাবনা থেকে মুক্ত হয়ে একাগ্রচিত্তে আল্লাহর সামনে উপস্থিত হওয়া। রাসুলুল্লাহ (সা.) নামাজকে তাঁর চোখের শীতলতা হিসেবে উল্লেখ করেছেন। হাদিসে এসেছে,
“সুগন্ধি ও নারীকে আমার কাছে প্রিয় করা হয়েছে, আর আমার চোখের শীতলতা রাখা হয়েছে নামাজে।” (আহমাদ, নাসায়ি)
নামাজের সময় একজন মুসলিমের মনে রাখা উচিত যে, সে যেন আল্লাহকে দেখছে অথবা আল্লাহ তাকে দেখছেন। রাসুল (সা.) বলেছেন,
“এমনভাবে আল্লাহর ইবাদত করো, যেন তুমি তাঁকে দেখতে পাচ্ছ। আর যদি তা না পারো, তবে মনে রাখো তিনি তোমাকে দেখছেন।” (বুখারি, মুসলিম)
কিন্তু অনেক সময় শয়তানের প্ররোচনা বা পার্থিব চিন্তার কারণে নামাজে মনোযোগ বজায় রাখা কঠিন হয়ে পড়ে। যদি কেউ অন্যমনস্কভাবে নামাজ আদায় করে, তবে তা অবশ্যই নিন্দনীয়। তবে এমন ব্যক্তি নামাজ পরিত্যাগকারী হিসেবে গণ্য হবে না, কারণ সে অন্তত নামাজের নিয়ত করেছে এবং কিছু সময়ের জন্য হলেও আল্লাহর স্মরণে মগ্ন হয়েছে।
তবে অমনোযোগী নামাজ আদায়কারীর অবস্থা খুবই নাজুক। যে বান্দা আল্লাহর সামনে দাঁড়িয়েও তাঁর দিকে মনোযোগ দেয় না, তার চেয়ে বরং যে নামাজই পড়ে না, তার অবস্থা কিছুটা ভালো হতে পারে। কারণ, নামাজে গাফেলতির অর্থ হলো আল্লাহর সামনে উপস্থিত থেকেও তাঁর প্রতি অবহেলা প্রদর্শন।
সুতরাং, অমনোযোগ সহকারে নামাজ পড়লে তা কবুল হওয়ার আশা থাকলেও শাস্তিরও সম্ভাবনা রয়েছে। তাই নামাজের সময় পূর্ণ একাগ্রতা ও খুশু-খুজুর সাথে আদায় করা উচিত।
(তাফসিরে মাআরিফুল কোরআন, ১ম খণ্ড, পৃষ্ঠা ২০৫)
মন্তব্য করুন