গাইবান্ধায় যমুনা নদে কয়েক দফা পানি কমবেশি হয়েছে। গত কয়েকদিন বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে গাইবান্ধার নদ নদীগুলোতে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। নদীতে পানি টলমল করায় তীরে বসবাসকারীরা তাদের পুরাতন নৌকা মেরামত ও নতুন করে তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। বেড়েছে নৌকার কারিগরদের কর্মব্যস্ততা।
এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গাইবান্ধা সদর উপজেলার ব্রহ্মপুত্র নদ, যমুনা, ঘাঘট, তিস্তা নদীতে কিছুদিন ধরে পানি বাড়তে শুরু করে। নদীতে পানি না থাকায় কয়েকটি নৌঘাট বন্ধ ও কয়েকটি অন্যত্র স্থানান্তর করা হয়। নদীতে নাব্য ফিরে আসায় নৌ চলাচল স্বাভাবিক হয়। নতুন পানি আসায় এসব নদনদীগুলোর তীর এলাকায় বসবাসরত চরের এলাকাবাসীর চলাচলের জন্য এখন একমাত্র বাহন হয়ে উঠেছে নৌকা। জেলার চরবাসী এখন নতুন নৌকা তৈরি এবং পুরাতন নৌকা মেরামত করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
গাইবান্ধা জেলার কামারজানী, গিদারী, কুন্দেরপাড়া, বালাসী, ফুলছড়ি, বেলকাসহ বিভিন্ন নৌঘাটগুলোতে এখন নতুন নৌকা তৈরি এবং পুরাতন নৌকা মেরামতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কারিগরেরা।
নৌকা তৈরিতে সাধারণত শালকাঠ,আমকাঠ, ইউক্রিকটার কাঠ বেশি ব্যবহার হয়। তবে কেউ ছোট নৌকা তৈরির ক্ষেত্রে কাঁঠাল গাছের কাঠও ব্যবহার করে থাকেন। নৌকা তৈরিতে আলকাতরা, তারকাঁটা, গজাল, পাতাম ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়। সাধারণত একটি ডিঙি নৌকা তৈরি করতে ৪ থেকে ৫ জন শ্রমিক লাগে। তবে নিজে কারিগর নিয়ে নৌকা তৈরিতে একটু খরচ কম পড়ে। অর্ডার দিয়ে তৈরি করা নৌকা কিনতে গেলে দাম একটু বেশি পড়ে এবং টেকসইও কম হয়।
ফুলছড়ি চরের বাসিন্দা মোঃ খইমুদ্দিন মিয়া জানান, এই নৌকাটি তৈরি করতেছি, আমরা এই নৌকায় করে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করবো।
নৌকা তৈরির কারিগর ফুলছড়ি উপজেলার আলগার চর গ্রামের নাসির উদ্দিন বলেন, বিশ বছর থেকে এই নৌকা তৈরির কাজ করি, জেলার বিভিন্ন স্থানে চুক্তি ও দিন হাজিরায় নৌকা তৈরি করি।
নৌকা তৈরির কারিগর সুন্দরগঞ্জের কাপাশিয়া ইউনিয়নের লালচামার এলাকার বাসিন্দা মোঃ সোলেয়মান জানান, পানি বৃদ্ধির সঙ্গে নৌকা তৈরির অর্ডার বৃদ্ধি পেয়েছে। ছোট ডিঙি নৌকার অর্ডার বেশি পাওয়া যাচ্ছে। তবে সকল সাইজের নৌকাই তৈরি হচ্ছে। ছোট ডিঙি নৌকা সাধারণত ৮ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ১৪ হাজার টাকা মজুরি নেওয়া হয়। নৌকা কত হাত হবে তার ওপরে এর দামের কমবেশি হয়। তার দোকানে তিনিসহ ৪ জন কারিগর কাজ করেন। তিনি বলেন, ‘সারাবছর আমি ১০০-১৫০ টির বেশি নৌকা বানাই।
মন্তব্য করুন