গত কয়েকদিন বিরতি দিয়ে হলেও সোমবার সন্ধ্যা থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত টানা বৃষ্টিতে রংপুর নগরীর বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। নগরীর বিভিন্ন নিম্নাঞ্চল ও অলিগলিতে এক থেকে দেড় ফুট পানি জমে যাওয়ায় স্থানীয় বাসিন্দাদের মারাত্মক দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
রংপুর আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার সকাল ৬টা পর্যন্ত নগরীতে ১১৮.৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। গত দুই দিনে মোট বৃষ্টিপাতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২২৬ মিলিমিটার। আবহাওয়াবিদ মোস্তাফিজার রহমান জানিয়েছেন, আজও সারাদিন বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে।
নগরীর মুন্সিপাড়া, মুলাটোল, বাবু খাঁ, গোমস্তাপাড়া, জুম্মাপাড়া, হনুমানতলাসহ কমপক্ষে ২০-২৫টি মহল্লা প্লাবিত হয়েছে। অনেক বাড়িঘর ও রাস্তায় পানি ঢুকে পড়ায় হাজার হাজার মানুষ অস্বস্তিকর পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছেন। কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও পানি ঢুকেছে, যার ফলে শিক্ষার্থীরা পড়াশোনায় বিঘ্নের সম্মুখীন হচ্ছেন।
নগরীর ‘ফুসফুস’ খ্যাত শ্যামা সুন্দরী খাল সঠিকভাবে খনন না করায় বৃষ্টির পানি উপচে আশেপাশের এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে। ১২ কিলোমিটার দীর্ঘ এই খালের অনেক অংশ ভরাট হয়ে যাওয়ায় পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা ব্যাহত হচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কন্ট্রোল রুম সূত্রে জানা গেছে, অবিরাম বৃষ্টির কারণে তিস্তা নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে। যদিও এটি এখনও বিপদসীমার নিচে রয়েছে, তবুও চরাঞ্চলের অনেক এলাকা প্লাবিত হওয়ায় কৃষকদের ধানক্ষেত ও রবি শস্যের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার বাসিন্দারা জানান, জলাবদ্ধতার এই সমস্যা প্রতি বর্ষাতেই দেখা দিলেও স্থায়ী সমাধানের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। তারা দ্রুত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা ও ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন।
স্থানীয় প্রশাসন জলাবদ্ধতা কমাতে জরুরি ভিত্তিতে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে। তবে দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের জন্য শ্যামা সুন্দরী খালসহ অন্যান্য নালা-নর্দমা পুনঃখননের দাবি উঠেছে স্থানীয়দের পক্ষ থেকে।
মন্তব্য করুন