বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আওয়ামী লীগের সব রাজনৈতিক কার্যক্রম সাময়িকভাবে নিষিদ্ধ করেছে। সরকারের পক্ষ থেকে জারি করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বিচারিক প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনগুলোর যেকোনো কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।
এই সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর তাদের নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। মঙ্গলবার (১৩ মে) ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত ব্রিফিংয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রধান উপ-মুখপাত্র মাইকেল “টমি” পিগট বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের কোনো নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলকে সমর্থন করে না। আমরা একটি মুক্ত ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া এবং সবার জন্য ন্যায়সংগত ও স্বচ্ছ বিচার ব্যবস্থাকে সমর্থন করি।”
তিনি আরও যোগ করেন, “আমরা সব দেশের প্রতি আহ্বান জানাই—মতপ্রকাশ, শান্তিপূর্ণ সমাবেশ ও সংগঠন করার স্বাধীনতা যেন নিশ্চিত করা হয়।”
ব্রিফিংয়ে আরেক প্রশ্নের জবাবে পিগটকে বাংলাদেশে উগ্রবাদ ও সন্ত্রাসবাদ সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান জানতে চাওয়া হয়। প্রশ্নকারী অভিযোগ করেন, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের একজন আইন উপদেষ্টা সন্ত্রাসী সংগঠন লস্কর-ই-তাইয়্যেবার সদস্যের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এছাড়া, কাশ্মির ইস্যুতে সহিংসতা উসকে দেওয়ার জন্য কিছু রাজনৈতিক ও ধর্মীয় নেতাকে সমর্থন করা হচ্ছে বলে দাবি করা হয়।
এ বিষয়ে পিগট বলেন, “আমি আগেই বাংলাদেশ সম্পর্কে আমাদের সাধারণ নীতিগত অবস্থান ব্যক্ত করেছি। আমরা বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে আমাদের দীর্ঘদিনের সম্পর্ককে গুরুত্ব দিই এবং বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গেও কাজ করতে আগ্রহী।”
তিনি এ বিষয়ে আর কোনো মন্তব্য এড়িয়ে যান এবং আগের বক্তব্যের পুনরাবৃত্তি করেন।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর তাদের বক্তব্যে স্পষ্ট করে দিয়েছে যে তারা বাংলাদেশের কোনো রাজনৈতিক দলকে সরাসরি সমর্থন করে না। তবে তারা দেশটিতে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া, স্বচ্ছ বিচার ব্যবস্থা এবং মৌলিক অধিকার রক্ষার ওপর জোর দিচ্ছে।
এই প্রতিক্রিয়ায় আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। কেউ কেউ মনে করছেন, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে সরাসরি হস্তক্ষেপ না করলেও গণতন্ত্র ও মানবাধিকার রক্ষার বিষয়ে তাদের অবস্থান স্পষ্ট। অন্যদিকে, বাংলাদেশ সরকারের সমর্থকরা যুক্তরাষ্ট্রের এই বক্তব্যকে ভারসাম্যপূর্ণ বলে মনে করছেন।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এখন আন্তর্জাতিক মহলের নজরে রয়েছে। আগামী দিনগুলোতে এই ইস্যুতে আরও প্রতিক্রিয়া আসতে পারে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
মন্তব্য করুন