ইউক্রেনে শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সরাসরি দ্বিপাক্ষিক আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তিনি জানান, ইস্টার উপলক্ষে একতরফাভাবে ঘোষিত ৩০ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতির পরও তিনি আরও যুদ্ধবিরতি ও শান্তি আলোচনা চালিয়ে যেতে প্রস্তুত রয়েছেন।
রুশ রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের এক প্রতিবেদককে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পুতিন বলেন, “মস্কো সব ধরনের শান্তি উদ্যোগের প্রতি উন্মুক্ত, এবং আমরা কিয়েভ থেকেও একই ধরনের প্রতিক্রিয়া আশা করি।” তিনি আরও বলেন, “আমরা সবসময় যুদ্ধবিরতির পক্ষে ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করে এসেছি, এবং সেই কারণেই এই ধরনের প্রস্তাব দিয়েছি।”
পুতিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ পরে সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেন যে, প্রেসিডেন্ট ইউক্রেনের সঙ্গে সরাসরি আলোচনার সম্ভাবনার কথাই বলেছেন।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বেসামরিক স্থাপনাগুলো রক্ষার জন্য যুদ্ধবিরতির মেয়াদ ৩০ দিন বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, এটি বেসামরিক নাগরিকদের জন্য জরুরি এবং মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকেও প্রয়োজনীয়।
জেলেনস্কির প্রস্তাবিত ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পুতিন বলেন, “এটি একটি সতর্কতার সঙ্গে বিবেচ্য বিষয়, সম্ভবত দ্বিপাক্ষিকভাবেও। আমরা এটি একেবারে উড়িয়ে দিচ্ছি না।”
তবে যুদ্ধবিরতির বাস্তবায়ন নিয়ে দুই পক্ষই একে অপরকে লঙ্ঘনের অভিযোগ করেছে। ইস্টার উপলক্ষে রাশিয়ার একতরফা যুদ্ধবিরতির ঘোষণার পর যুদ্ধ পুনরায় শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুতিন।
যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, তারা যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাবকে স্বাগত জানাবে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, যিনি দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় এসেছেন, এই যুদ্ধের অবসান ঘটানোর অঙ্গীকার করেছেন। যদিও তিনি রাশিয়ার অবস্থানের প্রতি নমনীয়তা দেখিয়েছেন, ইউক্রেনের প্রতি তার দৃঢ় সমর্থন এখনও বহাল রয়েছে।
রাশিয়া সম্প্রতি ট্রাম্পের প্রস্তাবিত পূর্ণ ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতির পরিকল্পনা প্রত্যাখ্যান করেছে, যদিও ইউক্রেন তা মেনে নিয়েছিল। এ পরিস্থিতিতে, সৌদি আরবে পরোক্ষ আলোচনার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র উভয় পক্ষের মধ্যে সমঝোতার চেষ্টা করেছে। এর ফলে রাশিয়া ইউক্রেনের জ্বালানি স্থাপনাগুলোর ওপর হামলা সাময়িকভাবে স্থগিত করতে রাজি হয়। যদিও পরে উভয় দেশই একে অপরকে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ করেছে।
মন্তব্য করুন