পোল্যান্ড সরকার একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব পাস করেছে, যার মাধ্যমে ইসরাইলি সিনিয়র কর্মকর্তাদের পোল্যান্ডে মুক্ত ও নিরাপদ ভ্রমণের নিশ্চয়তা প্রদান করা হয়েছে। এই পদক্ষেপ ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু, সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট, এবং অন্যান্য শীর্ষ কর্মকর্তাদের অন্তর্ভুক্ত করে, যাদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) থেকে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি রয়েছে।
প্রস্তাবটি বিশেষভাবে নেওয়া হয়েছে ২০২৫ সালের ২৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য জার্মান নাৎসি কনসেনট্রেশন ক্যাম্প আউশভিৎস মুক্তির ৮০তম বার্ষিকী উদযাপনের জন্য। এই ঐতিহাসিক অনুষ্ঠানে ইসরাইলি নেতাদের উপস্থিতি নিশ্চিত করার জন্যই পোল্যান্ড এই পদক্ষেপ নিয়েছে।
পোলিশ সরকারের বিবৃতিতে বলা হয়েছে:
“এই সিদ্ধান্ত ইহুদি জাতির প্রতি শ্রদ্ধার প্রতীক, যারা হলোকাস্টের সময় তৃতীয় রাইখের গণহত্যার শিকার হয়েছিল।”
আউশভিৎস কনসেনট্রেশন ক্যাম্প দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় একটি প্রধান নাৎসি ঘাঁটি ছিল, যেখানে ১১ লাখেরও বেশি মানুষ, মূলত ইহুদি, গণহত্যার শিকার হন। প্রতি বছর এই বার্ষিকী উপলক্ষে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নেতারা শোক এবং স্মরণ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।
আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে পোল্যান্ডের দায়িত্ব হলো তাদের মাটিতে পা রাখলে গ্রেফতারি পরোয়ানা থাকা সন্দেহভাজনদের আটক করা। তবে এই বিশেষ প্রস্তাবের মাধ্যমে পোল্যান্ড ইসরাইলি নেতাদের ক্ষেত্রে আইসিসির আদেশ কার্যকর না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এটি একটি ব্যতিক্রমী পদক্ষেপ, কারণ:
ইসরাইলি নেতাদের বিরুদ্ধে আইসিসির পরোয়ানাগুলো মূলত ফিলিস্তিন অঞ্চলে মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং যুদ্ধাপরাধের অভিযোগের ভিত্তিতে জারি করা হয়েছে। বিশেষত গাজা উপত্যকায় সামরিক অভিযান এবং বসতি স্থাপন সংক্রান্ত পদক্ষেপে এসব অভিযোগ উঠে এসেছে।
পোল্যান্ডের এই সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে।
পোল্যান্ড এই পদক্ষেপের মাধ্যমে:
পোল্যান্ডের এই সিদ্ধান্ত কেবলমাত্র ইসরাইলি নেতাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এটি আন্তর্জাতিক কূটনীতি, আইন এবং ইতিহাসের সংবেদনশীলতার একটি গুরুত্বপূর্ণ উদাহরণ। যদিও এই সিদ্ধান্ত প্রশংসা এবং সমালোচনার জন্ম দিয়েছে, এটি স্পষ্ট যে পোল্যান্ড আউশভিৎস বার্ষিকীকে কেন্দ্র করে একটি শক্তিশালী বার্তা দিতে চায়—ইতিহাসের নিষ্ঠুর বাস্তবতা ভুলে না যাওয়ার আহ্বান।
মন্তব্য করুন