দ্বিতীয় দফার পরমাণু আলোচনা শুরু হওয়ার কয়েকদিন আগে, ইরানের প্রতি তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি ‘সম্পূর্ণভাবে বন্ধ’ করার আহ্বান জানিয়েছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দূত স্টিভ উইটকফ। তার এই মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করেছে ইরান।
মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) এক্সে (সাবেক টুইটার) দেওয়া এক পোস্টে উইটকফ বলেন, ইরান যদি ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে চায়, তাহলে তাদের ‘পারমাণবিক সমৃদ্ধকরণ ও অস্ত্রায়ন কর্মসূচি’ সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করতে হবে। তিনি আরও উল্লেখ করেন, ইরানের সঙ্গে চুক্তি কেবল তখনই হবে, যদি তা ট্রাম্পের শর্ত অনুযায়ী হয়। এছাড়া, তিনি মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি, স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধি নিশ্চিত করতে একটি কার্যকর কাঠামো তৈরির প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন।
উইটকফ আরও লেখেন, “বিশ্বের স্বার্থে একটি কঠোর, ন্যায্য ও দীর্ঘস্থায়ী চুক্তি আবশ্যক। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আমাকে সেই লক্ষ্যেই দায়িত্ব দিয়েছেন।”
উইটকফের এই মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি। তিনি এই মন্তব্যকে ‘পরস্পরবিরোধী’ এবং ‘আলোচনার জন্য অসহযোগী’ বলে উল্লেখ করেন। সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, “আমরা মার্কিন পক্ষ থেকে বিভিন্ন ধরনের বার্তা শুনছি, যার অনেকগুলোই একে অপরের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এসব বার্তা আলোচনা প্রক্রিয়ার জন্য সহায়ক নয়।”
আরাঘচি আরও বলেন, “মার্কিন পক্ষের প্রকৃত অবস্থান আলোচনার টেবিলেই স্পষ্ট হবে। যদি তারা গঠনমূলক মনোভাব নিয়ে আসে, তবে আমি আশাবাদী যে আমরা একটি সম্ভাব্য চুক্তির কাঠামো নিয়ে আলোচনা শুরু করতে পারব। তবে যদি পরস্পরবিরোধী ও বিরোধপূর্ণ অবস্থান অব্যাহত থাকে, তাহলে আলোচনা কঠিন হয়ে পড়বে।”
তিনি জোর দিয়ে বলেন, “আলোচনা হতে হবে সমান ভিত্তিতে—কোনও চাপ বা একপাক্ষিক অবস্থান আরোপের মাধ্যমে নয়, বরং পারস্পরিক সম্মান বজায় রেখে। ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এই বিষয়টি আলোচনার বিষয় নয়।’”
উল্লেখ্য, ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে পরোক্ষ পারমাণবিক আলোচনা গত শনিবার ওমানে শুরু হয়েছে। এই আলোচনা দ্বিতীয় দফায় আগামী শনিবার আবারও অনুষ্ঠিত হবে। ইরান প্রথম দফার আলোচনাকে ‘পারস্পরিক শ্রদ্ধার ভিত্তিতে একটি গঠনমূলক পরিবেশে সম্পন্ন হয়েছে’ বলে জানিয়েছে।
তথ্যসূত্র: ডেইলি সাবাহ
মন্তব্য করুন