ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ৬০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এছাড়া শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় চলা এই হামলায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে গাজার মোট নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫০ হাজার ৭৫২ জনে। গত ১৮ মার্চ থেকে ইসরায়েলের নতুন করে হামলা শুরু করার পর থেকে এ পর্যন্ত ১ হাজার ৩৯১ ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন।
সোমবার ভোর থেকে ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় ব্যাপক বোমাবর্ষণ চালায়। আল জাজিরার প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেইর আল-বালাহতে একটি বাড়িতে হামলায় ৯ জন এবং খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালের কাছে একটি তাঁবুতে বোমা হামলায় ৩ জন নিহত হন। এদিকে, আনাদোলু এজেন্সির তথ্যমতে, গত ২৪ ঘণ্টায় ৫৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, নতুন হামলায় ১৩৭ জন আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এতে সংঘাত শুরুর পর থেকে আহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ১৫ হাজার ৪৭৫ জনে। অনেক নিহত ও আহত এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে রয়েছেন, যাদের উদ্ধার কাজ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
ইসরায়েল গত ১৯ জানুয়ারি যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হলেও গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহার নিয়ে হামাসের সঙ্গে মতবিরোধের জেরে ১৮ মার্চ থেকে পুনরায় হামলা শুরু করে। এর ফলে গত দুই সপ্তাহে প্রায় ৪ লাখ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলের আক্রমণে গাজার ৮৫% জনগণ বাস্তুহারায় পরিণত হয়েছেন এবং ৬০% অবকাঠামো ধ্বংস হয়েছে।
গত নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। এছাড়া, আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলা দায়ের করা হয়েছে।
গাজার স্বাস্থ্য ব্যবস্থা প্রায় ধসের মুখে। হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা সামগ্রী ও বিদ্যুতের acute অভাব চলছে। আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থাগুলো অবরুদ্ধ গাজায় তীব্র মানবিক সংকটের কথা বারবার উল্লেখ করলেও ইসরায়েলের নিষেধাজ্ঞার কারণে সহায়তা পৌঁছানো কঠিন হচ্ছে।
ইসরায়েলের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, হামাসের সন্ত্রাসী কার্যক্রম বন্ধ করতেই এই অভিযান চলছে। তবে ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকদের ব্যাপক হতাহতের ঘটনায় বিশ্বজুড়ে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের তৈরি হয়েছে।
মন্তব্য করুন