দখলদার ইসরাইলি বাহিনী গাজার বিভিন্ন স্থানে নতুন করে রাতভর ও ভোরের দিকে বিমান হামলা চালিয়ে অন্তত ২৭ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে।
আল-জাজিরার প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুযায়ী, ইসরাইলের অব্যাহত আগ্রাসনে এ পর্যন্ত ৪৮,৫৭৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১,১২,০৪১ জন আহত হয়েছেন।
অন্যদিকে, গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, মৃতের সংখ্যা ৬১,৭০০ জনের বেশি। এছাড়া, ধ্বংসস্তূপের নিচে নিখোঁজ হাজার হাজার ফিলিস্তিনিকে মৃত বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে।
হামাসের প্রতিক্রিয়া
এমন পরিস্থিতিতে হামাসের কর্মকর্তা তাহের আল-নোনো বলেছেন, ইসরাইলের বোমাবর্ষণ সত্ত্বেও তারা আলোচনা চালিয়ে যেতে প্রস্তুত। তবে তিনি জোর দিয়ে বলেন, যদি কোনো স্বাক্ষরিত চুক্তি থাকে, তাহলে নতুন চুক্তির প্রয়োজন নেই।
নেতানিয়াহুর যুদ্ধবিরতি প্রত্যাখ্যান
ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাপক সামরিক ও আর্থিক সহায়তা পেয়েই হামাসের যুদ্ধবিরতির আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি দাবি করেছেন, ‘ইসরাইলি বাহিনী কেবল হামাস যোদ্ধাদেরই লক্ষ্যবস্তু বানাচ্ছে’।
তবে ফিলিস্তিনি সরকারি সংবাদ সংস্থা ওয়াফা জানিয়েছে, মঙ্গলবার ইসরাইল জানুয়ারি থেকে চলা অস্ত্রবিরতি লঙ্ঘন করে হামলা চালিয়েছে, যেখানে একদিনেই ৪০৪ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
ওয়াফার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসের পশ্চিমে আল-মাওয়াসি এলাকায় শরণার্থীদের একটি তাবুতে ইসরাইলি ড্রোন হামলায় ২ ফিলিস্তিনি নিহত ও ৫ জন আহত হয়েছেন।
এছাড়া,
এছাড়া, রাফাহ শহরের পশ্চিম অংশে আরেকটি তাবুতে ইসরাইলি বিমান হামলায় ২ শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে মেডিকেল সূত্র জানিয়েছে।
গাজার আল-আহলি ব্যাপটিস্ট হাসপাতালের মেডিকেল সূত্র জানিয়েছে, আল-সাবরা এলাকায় আল-হাত্তাব পরিবারের একটি বাড়িতে ইসরাইলি হামলায় ৪ জন নিহত ও আরও কয়েকজন আহত হয়েছেন।
এই হামলাগুলোকে জানুয়ারিতে কাতার, মিসর ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় হওয়া অস্ত্রবিরতির সবচেয়ে বড় লঙ্ঘন হিসেবে দেখা হচ্ছে।
২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরাইলের সামরিক অভিযানে গাজায় এখন পর্যন্ত প্রায় ৬২,০০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। আহত হয়েছেন ১১২,০০০-এর বেশি মানুষ।
২০২৪ সালের নভেম্বর মাসে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (ICC) ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং তার সাবেক প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে।
এছাড়া, আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালত (ICJ)-এ ইসরাইলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগে মামলা চলছে।
মন্তব্য করুন