রমজান মাসে সারাদিন রোজা রাখার ফলে শরীরে পানিশূন্যতা, শক্তির ঘাটতি ও ক্লান্তি দেখা দেওয়া স্বাভাবিক। তবে সঠিক খাদ্যাভ্যাস, পর্যাপ্ত বিশ্রাম ও স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রার মাধ্যমে সহজেই এই ক্লান্তি দূর করা সম্ভব।
অতিরিক্ত ভাজাপোড়া, মসলাযুক্ত খাবার ও কোল্ড ড্রিংকস পরিহার করুন, কারণ এসব খাবার ক্লান্তি বাড়ায়। অতিরিক্ত চা-কফি পানিশূন্যতা বাড়াতে পারে, তাই সেগুলোর পরিমাণও নিয়ন্ত্রণ করা উচিত।
সেহরিতে এমন খাবার খাওয়া উচিত, যা দীর্ঘক্ষণ শক্তি জোগায় এবং শরীরকে হাইড্রেটেড রাখে। যেমন—
✅ প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার: ডিম, দুধ, দই, বাদাম ও চিয়া সিডস— এগুলো দীর্ঘক্ষণ শক্তি দেয়।
✅ ফাইবারযুক্ত খাবার: লাল আটার রুটি, ওটস, ফলমূল (আপেল, কলা, খেজুর) হজম হতে সময় নেয়, ফলে ক্ষুধা কম অনুভূত হয়।
✅ হাইড্রেটিং খাবার: শসা, তরমুজ, ডাবের পানি শরীরকে আর্দ্র রাখে।
ইফতারের সময় দ্রুত শক্তি ফিরে পাওয়ার জন্য পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করা জরুরি।
🔹 প্রথমে খেজুর ও এক গ্লাস পানি বা ডাবের পানি পান করুন।
🔹 এরপর স্যুপ, ফল, দই, সালাদ ও হালকা প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার খান।
🔹 ইফতার থেকে সেহরি পর্যন্ত পর্যাপ্ত পানি পান করুন (৮-১০ গ্লাস)।ন
রোজায় ঘুমের রুটিন এলোমেলো হয়ে গেলে শরীরে দুর্বলতা ও ক্লান্তি আসতে পারে। তাই—
✔️ প্রতিদিন ৬-৮ ঘণ্টা ঘুম নিশ্চিত করুন।
✔️ সেহরির পর ১-২ ঘণ্টা বিশ্রাম নিন।
✔️ দিনের মধ্যে ২০-৩০ মিনিটের পাওয়ার ন্যাপ নিন।
অনেকে মনে করেন, রোজায় ব্যায়াম করা উচিত নয়। তবে হালকা ব্যায়াম বা হাঁটাহাঁটি শরীরকে চাঙা রাখতে সাহায্য করে।
🔸 ইফতারের ১-২ ঘণ্টা পর হালকা ব্যায়াম করুন।
🔸 প্রতিদিন ১৫-২০ মিনিট হাঁটুন।
🔸 তবে কঠোর ব্যায়াম এড়িয়ে চলুন, যা ক্লান্তি বাড়াতে পারে।
রোজায় অতিরিক্ত কাজ করলে মানসিক চাপ বেড়ে যায়, যা ক্লান্তি বাড়াতে পারে। তাই—
✔️ কাজের চাপ কমিয়ে পরিকল্পনা করুন।
✔️ সম্ভব হলে দুপুর বা বিকালে বিশ্রাম নিন।
✔️ চাপ অনুভব করলে গভীর শ্বাস নিন ও ধীরগতিতে কাজ করুন।
রোজায় মানসিক প্রশান্তি থাকাও গুরুত্বপূর্ণ। তাই—
✅ ইবাদত ও মেডিটেশন করুন।
✅ অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা এড়িয়ে চলুন।
✅ পরিবারের সঙ্গে সময় কাটান, ইতিবাচক চিন্তা করুন।
সঠিক খাদ্যাভ্যাস, পর্যাপ্ত বিশ্রাম ও স্বাস্থ্যকর রুটিন মেনে চললে রোজায় ক্লান্তি দূর করা সম্ভব এবং আপনি সারাদিন সতেজ থাকতে পারবেন।
মন্তব্য করুন