টানা চার দিনের ভারি বৃষ্টি ও উজানের ঢলে কুড়িগ্রামের প্রধান নদ-নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে। ব্রহ্মপুত্র ও ধরলা নদীর পানি কিছুটা বৃদ্ধি পেলেও তিস্তা ও দুধকুমার নদীর পানি কমে আপাতত স্থিতিশীল রয়েছে। তবে জেলার নিম্নাঞ্চলের চরগুলো এখনো পানির নিচে থাকায় কৃষকের ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে, বন্যায় জেলার ১৭০ হেক্টর জমির ফসল পানির নিচে। এর মধ্যে রোপা আমন ১২০ হেক্টর, শাক-সবজি ৪৫ হেক্টর এবং মাষকলাই ৫ হেক্টর ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার তথ্য অনুযায়ী, কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানিয়েছে গত ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র নদের পানি চিলমারী পয়েন্টে ১৩ সেন্টিমিটার এবং নুনখাওয়া পয়েন্টে ১৪ সেন্টিমিটার বেড়েছে। ধরলা নদীর পানি সেতু পয়েন্টে ২ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেলেও বর্তমানে স্থিতিশীল রয়েছে। অন্যদিকে, তিস্তা নদীর পানি কাউনিয়া পয়েন্টে ১ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ২৫ সেন্টিমিটার নিচে এবং দুধকুমার নদীর পানি পাটেশ্বরী পয়েন্টে ১৩ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ৪৯ সেন্টিমিটার নিচে প্রবাহিত হচ্ছে।
নাগেশ্বরীর কৃষক খন্দকার হোসেন বলেন, ‘ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে নদ-নদীর পানি দ্রুত বাড়ছে। নিচু এলাকার ধানক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে।’
রাজারহাট উপজেলার তিস্তা নদী পাড়ের কৃষক আবুল মিয়া জানান, ‘তিস্তার পানি কিছুটা কমলেও আমার মাষকলাই ক্ষেত এখনো ডুবে আছে। সবজি ক্ষেতও নষ্ট হয়ে গেছে।’
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক আসাদুজ্জামান বলেন, ‘‘পানি এখনও নিচু চরাঞ্চল থেকে নামেনি। ফলে রোপা আমন, শাকসবজি ও মাষকলাইসহ অন্তত ১৭০ হেক্টর ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’’
এদিকে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান জানিয়েছেন, আগামী ২৪ ঘণ্টায় তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদীর পানি সমতলে বাড়তে পারে। এতে তিস্তা ও দুধকুমার নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করার আশঙ্কা রয়েছে এবং ধরলা নদী সতর্কসীমার কাছাকাছি প্রবাহিত হতে পারে। ফলে জেলার নিম্নাঞ্চলের মানুষজন নতুন করে প্লাবনের শঙ্কায় রয়েছেন।
মন্তব্য করুন