গাইবান্ধার সাঘাটায় ব্রহ্মপুত্র নদের তানতীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ সংস্কার কাজ শেষ হতে না হতেই বৃষ্টিতে ধস শুরু হয়েছে। বাঁধজুড়ে ছোট বড় অসংখ্য গর্তের সৃষ্টি হওয়ার দরুন এ বাঁধের ওপর এলজিইডি ৫ কি.মি. সাঘাটা-জুম’ববাড়ীসড়কটি যানবাহন চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ায় চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে বড় ও মাঝারী যানবাহন। ছোট ছোট যানবাহনগুলোতে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে গিয়ে জনসাধারণ প্রতিদিন দুর্ঘটনার শিকারে পড়ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোকজন মাঝে মাঝে বালু দিয়ে কোনরকমে ধস ঠেকানোর চেষ্টা করলেও। তা একদিনের বেশি টিকছে না। ফলে বাঁধটির স্থায়িত্ব এবং জনগুরুত্বপূর্ণ এলজিইডির সড়কটির অস্তিত্ব নিয়ে দেখা দিয়েছে শখয়া।
বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধটির ডাকবাংলা হতে জুমারবাড়ী বাজারের প্রবেশ পথ পর্যন্ত ৫কি.মি. অংশ এলজিইডির সড়ক। এ সড়কটুকু বগুড়া জেলার সাথে সংযোগ হওয়ায় অত্যন্ত জনগুরুত্বপূর্ণ একারণে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের অসংখ্য যানবাহন চলাচল করে সড়কে। বাঁধটি সংস্কারের সময় বাঁধের মাটি খোড়াখুড়ি, অতিরিক্ত বালু ব্যবহার, বাঁশের একপাশে আইল নির্মাণ ও বাঁধের ওপরের পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় বৃষ্টি হলেই বাঁধে ধসের ধসের সৃষ্টি হচ্ছে। গত তিনদিনের প্রবল বৃষ্টির পানির তোড়ে বাঁধজুড়ে ছোট-বড়ধস ও গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে গত তিনদিন ধরে এ পথে বড় ও মাঝারী যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। প্রয়োজনের তাগিদে জনসাধারণ জান, অটোতে চলাচল করতে গিয়ে দুর্ঘটনায় শিকারে পড়ছে প্রতিদিন। এছাড়াও সংস্কার কাজে অতিরিক্ত বালু ব্যবহার করার কারণে মুন্দরহটি, বাশহাটা, সাথালিয়া, হাসিনকান্দি, বসন্তেরপাড়াসহ বাঁধের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টির পানিতে বসে গেছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার সাঘাটা ইউনিয়নের বাঁশহাটা উকুনপাগলীর মোড় হতে উপজেলার জুমারবাড়ী ইউনিয়নের (শেষ সীমানা) বসন্তের পাড়া পর্যন্ত প্রায় ১৫ কি.মি. এ বাঁধটি সংস্কারের জন্য গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রকল্প গ্রহণ করে। যার ব্যয় ধরা হয়েছে ২৪ কোটি ৮০ লাখ টাকা। তিনটি প্যাকেজে যৌথভাবে বাঁধ সংস্কারের কাজ পান রংপুরের ঠিকাদার হাসিবুল হাসান এবং এমএস রহমান। বিগত সালের ২০২৩ শুরুর দিকে এ বধ সংস্কার কাজ শুরু হয়। প্রথমে বাঁয়ের গোড়া থেকে গভীর করে মাটি কেটে বাঁধের উপরে তোলা হয়। পরবর্তীতে যমুনা নদী থেকে ভলগেট দিয়ে বালু এনে বাঁধের গভীরতা পুরণ করা হয়।
স্থানীয়দের অভিযোগ বাঁধের গোড়া কেটে গভীর করা এবং বাঁধের বারাম খোঁড়াখুঁড়ি ও অতিরিক্ত বাপু ব্যবহার করার দরুণ বাঁধটি দুর্বল হয়ে গেছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই পানির ভোরে বালু ধসে যাচ্ছে। এলজিইডির সাঘাটা উপজেলা প্রকৌশলী নয়ন রায় বলেন, এই মুহূর্তে রাস্তা মেরামত করার কোনো উপায় নেই। পরবর্তীতে বরাদ্দ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবোর) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হাফিজুল হক বলেন, বাঁধটিতে বৃষ্টির কারণে বেশ কয়েক জায়গায় ধসে গেছে। বাঁধের কাজ এখনও চলমান রয়েছে। ধসে যাওয়া স্থানে মাটি দিয়ে দ্রুত ভরাট করা হবে।
মন্তব্য করুন