গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার একটি মসজিদে সুদ-ঘুষ ও অন্যায়-অত্যাচারীর বিরুদ্ধে বয়ান দেওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে দায়িত্বশীল মুসল্লিরা। অবশেষে সেই মুসল্লিদের তোপের মুখে পড়ে চাকরি ছেড়ে চলে গেছেন মসজিদের ইমাম হাফেজ মো. হামিদুল ইসলাম।
সম্প্রতি উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের চিকনী সরকার পাড়া জামে মসজিদে জুমার নামাজের আগে ওইসব বয়ান দিতে গিয়ে দায়িত্ববান মুসল্লির কাছে লাঞ্চিত হয়েছেন ওই ইমাম।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সাদুল্লাপুর উপজেলার ফরিদপুর ইউনিয়নের চাঁদ করিম গ্রামের মজমল মিয়ার ছেলে হাফেজ মো. হামিদুল ইসলামকে প্রায় ৪ বছর আগে চিকনী সরকার পাড়া জামে মসজিদে ইমামতির দায়িত্ব দেন সমাজপতিরা। সেখানে ইসলামের আদর্শে ইমামতি করেন হামিদুল ইসলাম। এরই মধ্যে গত বছরের জুলাইয়ে মসজিদ মুসল্লিদের উদ্দেশ্যে জুলুম-নির্যাতনের বিরুদ্ধে বয়ান দেওয়ায় তাকে রাজাকারের বাচ্চা আখ্যায়িত করে গালি দেওয়া হয়। মসজিদটির কিছু দায়িত্বশীল ব্যক্তি কর্তৃক ইমামকে রাজাকারের বাচ্চা বলে গালি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এরপর কিছু দিন আগে সুদ-ঘুষের বিরুদ্ধে মসজিদে বয়ান দেন ইমাম হাফেজ মো. হামিদুল ইসলাম। এতেও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন কতিপয় মুসল্লি। তখন থেকে এই ইমামকে সড়ানোর জন্য বিভিন্ন অপকৌশল চালানো হয়। গেল রমজানে তারাবির নামাজ থেকে বঞ্চিত করাসহ অন্যান্য সামাজিক বিষয়েও ইমামকে বঞ্চিত করা হয়। এছাড়া মসজিদটির নাম পরিবর্তন করে চিকনী উত্তরপাড়া জামে মসজিদ নামে চালাচ্ছেন সেই দায়িত্ববান ব্যক্তিরা। সেইসঙ্গে ইমাম হামিদুল ইসলামের সঙ্গে অশোভনীয় আচারণ কারার প্রতিবাদ করায় জাহাঙ্গীর আলম সরকার হারুন নামের এক মুসল্লিকে সমাজ ছাড়তে হয়েছে বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে হাফেজ মো. হামিদুল ইসলাম বলেন, সমাজপতিদের অনুরোধে গত ৪ বছর আগে চিকনী সরকার পাড়া জামে মসজিদে ইমাম হিসেবে যোগদান করি। এরই ধারাবাহিকতায় মুসল্লিদের উদ্দেশ্যে জুলুম-নির্যাতনের বিরুদ্ধে বয়ান দেওয়ায় আমাকে রাজাকারের বাচ্চা বলে গালি দেওয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে সুদ-ঘুষের বিরুদ্ধে বয়ান দেওয়ায় আমার প্রতি ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। মসজিদটির দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিদের এমন আচারণের কারণে আমি ইমামতি ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছি।
এ ব্যাপারে চিকনী সরকার পাড়া জামে মসজিদ পরিচালনায় দায়িত্বে থাকা ছামছুল সরকার বিদ্যুত বলেন, আমাদের ইমাম হাফেজ মো. হামিদুল ইসলামকে রাজাকারের বাচ্চা বলে গালি দেওয়ার ঘটনাটি সত্য বটে। ইমামের সুদ-ঘুষের বিরুদ্ধে বয়ানকে কেন্দ্র করে আর কোন ঝামেলা না বাড়ানোয় ভালো। তবে স্বেচ্ছায় চাকরি ছেড়ে চলে গেছেন ইমাম সাহেব।
মন্তব্য করুন