দিনাজপুরের বোচাগঞ্জে এক যুবকের উপর মধ্যযুগীয় কায়দায় চালানো নির্মম হামলার ঘটনায় এখনও কোনো আসামিকে গ্রেফতার না করায় থানা পুলিশের বিরুদ্ধে জনমনে চরম ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। এই ঘটনায় বোচাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসান জাহিদ সরকারের অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন ও ঝাড়ু মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (১৬ জুন) বেলা ১১টায় সেতাবগঞ্জ চৌরাস্তায় ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন কর্মসূচি শেষে একটি ঝাড়ু মিছিল থানা গেট পর্যন্ত গিয়ে আবার চৌরাস্তায় এসে শেষ হয়।
সর্বস্তরের জনসাধারণের অংশগ্রহণে আয়োজিত এই কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন,“আহত ব্যক্তি মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছেন, অথচ পুলিশ একজন আসামিকেও গ্রেফতার করতে পারেনি। এটি চরম ব্যর্থতা। অবিলম্বে ওসিকে অপসারণ করতে হবে।”
তারা আরও হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আসামিদের গ্রেফতার না করা হলে হরতাল ও থানাঘেরাও কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।”
ভয়ঙ্কর পাশবিক নির্যাতন
গত ৯ জুন বিকেলে সেতাবগঞ্জ চিনিকল উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে একটি প্রীতি ক্রিকেট ম্যাচ চলাকালে স্থানীয় বিএনপি নেতা ও পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ড সভাপতি আসাদুজ্জামানের ছেলে শাহরিয়ার শিশির (২৪)-এর ওপর একদল যুবক পরিকল্পিতভাবে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হামলা চালায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, “এটি কোনো সাধারণ মারামারি নয়—একাধিকবার ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাথায় আঘাত করা হয়। এটি ছিল এক ভয়ঙ্কর ও পাশবিক হামলা।”
গুরুতর আহত অবস্থায় শিশিরকে হাসপাতালে নেওয়ার পর তার মাথার ডান পাশে রক্ত জমাট বাঁধার বিষয়টি ধরা পড়ে। জরুরি অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সেই রক্ত অপসারণ করা হয়। বর্তমানে সে আইসিইউতে সংকটাপন্ন অবস্থায় চিকিৎসাধীন।
মামলা হয়েছে, গ্রেফতার হয়নি
আহতের বাবা আসাদুজ্জামান ঘটনার দিনই বোচাগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। মামলায় রেল কলোনি পাড়ার ৮ জনকে অভিযুক্ত করা হয়।
পুলিশ একাধিক স্থানে অভিযান চালিয়ে কিছু দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করলেও এখনও পর্যন্ত কোনো আসামিকে গ্রেফতার করতে পারেনি। এতে জনমনে অসন্তোষ ও হতাশা ছড়িয়ে পড়েছে।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে বোচাগঞ্জ থানার ওসি হাসান জাহিদ সরকার আরসিটিভি’কে বলেন,“আমরা নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছি। খুব শিগগিরই আসামিদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে।”
মন্তব্য করুন