গত ২৪ ঘণ্টায় গাজা উপত্যকাজুড়ে ইসরায়েলি বিমান ও স্থল হামলায় অন্তত ৬০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে চিকিৎসা সূত্র। ব্যাপক হামলার ফলে অঞ্চলজুড়ে মানবিক সংকট আরও ভয়াবহ রূপ নিয়েছে।
গাজা শহরের শুজাইয়া এলাকায় একটি বিমান হামলায় তিনজন চিকিৎসাকর্মী নিহত হন। একই ঘটনায় দুইজন ফিলিস্তিনি প্রাণ হারান এবং আরো অনেকে আহত হন।
আল-রাশিদ বা আল-সাহিলি স্ট্রিটের নাবুলসি জংশনের কাছে আল-শিফা হাসপাতালের আশপাশে ইসরায়েলি হামলায় আরো আহতের খবর পাওয়া গেছে। শহরের উত্তরে আস-সাফতাওয়ি এলাকায় গোলাবর্ষণে আবারও হতাহতের ঘটনা ঘটে।
রাফাহর শাকুশ ও আল-আলম এলাকায় একটি ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত ত্রাণ বিতরণকেন্দ্রের কাছে ১৩ জন ত্রাণপ্রত্যাশী নিহত হন। একই এলাকায় অন্য একটি বিমান হামলায় আরো তিনজন প্রাণ হারান।
ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের সহায়তা প্রদানকারী জাতিসংঘের সংস্থা ইউএনআরডাব্লিউএ জানিয়েছে, গাজার হাজার হাজার বাস্তুচ্যুত পরিবার বর্তমানে চরম বিপদের মধ্যে আছে। গত তিন মাস ধরে ইসরায়েল নিরাপদ ও পর্যাপ্ত ত্রাণ সরবরাহে বাধা দিচ্ছে। এক বিবৃতিতে সংস্থাটি জানায়, ‘আমরা অসম্ভব কিছু চাইছি না। আমাদের কাজ করতে দিন—মানুষকে সাহায্য করুন এবং তাদের মর্যাদা বজায় রাখুন।
ইসরায়েল ইউএনআরডাব্লিউএ এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংস্থাকে গাজায় কার্যক্রম চালাতে নিষেধ করেছে, যার ফলে খাদ্য, পানি ও ওষুধের সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। শুধু ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত ‘গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন’ কিছু ত্রাণ কার্যক্রম চালাতে পারলেও, সেখানে পক্ষপাতিত্ব ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে বিতরণের আশঙ্কা উঠেছে।
হামাস ‘ম্যাডলিন’ নামক একটি ত্রাণবাহী জাহাজে হস্তক্ষেপ না করতে ইসরায়েলকে সতর্ক করেছে এবং জাহাজে থাকা কর্মীদের নিরাপত্তার সম্পূর্ণ দায়িত্ব ইসরায়েলের ওপর চাপিয়েছে। জাতিসংঘসহ একাধিক মানবিক সংস্থা হুঁশিয়ারি দিয়েছে, যদি ত্রাণ প্রবেশে বাধা চলতেই থাকে, তবে গাজায় শিগগিরই দুর্ভিক্ষ দেখা দেবে। লুটপাট, বিশৃঙ্খলা এবং ইসরায়েলি বাধার কারণে দুই মিলিয়ন গাজাবাসীর জন্য ত্রাণ সরবরাহ প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে।
ইউএনআরডাব্লিউএ জানিয়েছে, মার্চের ২ তারিখ থেকে ইসরায়েল গাজায় সব ধরনের ত্রাণ প্রবেশ নিষিদ্ধ করার পর এপ্রিল পর্যন্ত কোনো সাহায্য পৌঁছায়নি। খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি, আশ্রয় ও চিকিৎসা না থাকায় প্রায় ২০ লাখ মানুষের জীবন এখন চরম ঝুঁকিতে।
মন্তব্য করুন