যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনার স্বপ্ন দেখা হাজারো বিদেশি শিক্ষার্থীর জন্য নতুন করে জটিলতা তৈরি হয়েছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের নির্দেশে মার্কিন দূতাবাসগুলোতে শিক্ষার্থী ও এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রামের ভিসা সাক্ষাৎকার সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, নতুন কোনো সাক্ষাৎকারের তারিখ নির্ধারণ করা যাবে না, যতক্ষণ না পরবর্তী নির্দেশনা আসে।
শিক্ষার্থী ভিসার আবেদন প্রক্রিয়ায় এবার নতুন শর্ত যুক্ত হচ্ছে। আবেদনকারীদের সামাজিক মাধ্যম অ্যাকাউন্ট (ইনস্টাগ্রাম, এক্স/টুইটার, টিকটক ইত্যাদি) যাচাই করা হবে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, ভিসা আবেদনকারীদের অনলাইন পোস্ট, মন্তব্য এবং শেয়ার করা কন্টেন্ট বিশ্লেষণ করে দেখা হবে—এগুলো কি মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি তৈরি করতে পারে কিনা।
এই কড়াকড়ি নতুন শিক্ষার্থীদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী হারাতে পারে, যারা অনেক প্রতিষ্ঠানের আর্থিক স্থিতিশীলতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
এদিকে, ট্রাম্প প্রশাসনের আরেকটি সিদ্ধান্ত বিতর্ক তৈরি করেছে। মার্কিন স্বাধীন গণমাধ্যম এনপিআর ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ফেডারেল আদালতে মামলা দায়ের করেছে। অভিযোগ, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এনপিআর ও পিবিএস-এর মতো গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ এনে তাদের সরকারি তহবিল বন্ধ করার আদেশ দিয়েছেন।
মামলায় বলা হয়েছে, এই সিদ্ধান্ত সংবিধানের প্রথম সংশোধনীর লঙ্ঘন, যা মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করে। সমালোচকরা বলছেন, ট্রাম্প তার অপছন্দের সংবাদমাধ্যমকে চাপে রাখতে চাইছেন, যা গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের পরিপন্থী।
যারা যুক্তরাষ্ট্রে পড়তে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন, তাদের এখন অপেক্ষা করতে হবে কবে নাগাদ ভিসা প্রক্রিয়া আবার চালু হয়। এদিকে, সামাজিক মাধ্যম মনিটরিংয়ের নতুন নিয়ম ভিসা আবেদনকে আরও জটিল করে তুলতে পারে। বিশেষ করে যারা রাজনৈতিক বা স্পর্শকাতর ইস্যুতে সোশ্যাল মিডিয়ায় সক্রিয়, তাদের জন্য চ্যালেঞ্জ বাড়তে পারে।
এই সিদ্ধান্তগুলো কীভাবে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের উপর প্রভাব ফেলবে, তা এখনই স্পষ্ট নয়। তবে একথা নিশ্চিত যে, মার্কিন ভিসা প্রাপ্তি আগের চেয়ে আরও কঠিন হতে যাচ্ছে।
মন্তব্য করুন