ইসরাইলের চলমান আগ্রাসনে অবরুদ্ধ গাজায় আন্তর্জাতিক সাহায্য পৌঁছানোর প্রক্রিয়ায় জর্ডান বিপুল অর্থ উপার্জন করেছে বলে অভিযোগ করেছে মিডল ইস্ট আই (এমইই)। সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, জর্ডানের সরকারি দাতব্য সংস্থা জর্ডান হাশেমাইট চ্যারিটি অর্গানাইজেশন (জেএইচসিও) ইসরাইলি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় করে গাজায় ত্রাণ পাঠানোর একমাত্র অনুমোদিত মাধ্যম হিসেবে কাজ করছে।
জেএইচসিও-র কার্যক্রমের সঙ্গে সরাসরি সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলোর বরাতে এমইই জানায়, ত্রাণ কার্যক্রমের জন্য বিপুল অর্থ সংগ্রহ করছে জর্ডান। গাজায় প্রবেশ করা প্রতিটি ত্রাণবাহী ট্রাকের জন্য জর্ডান প্রায় ২,২০০ ডলার ফি আদায় করছে। এই ফি সরাসরি জর্ডানের সশস্ত্র বাহিনীর কাছে জমা দিতে হয়।
এছাড়া, গাজায় ত্রাণ ফেলার প্রতিটি বিমানের জন্য জর্ডান ২ থেকে ৪ লাখ ডলার পর্যন্ত চার্জ করছে, যেখানে প্রতিটি বিমানে থাকা ত্রাণের পরিমাণ একটি ট্রাকের অর্ধেকেরও কম।
এমইই-র প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ত্রাণ কার্যক্রম থেকে বাড়তি আয়ের ফলে জর্ডান তাদের লজিস্টিক অবকাঠামো সম্প্রসারণ করছে। ইতোমধ্যেই বিদেশি অনুদানে ২০০টি নতুন ট্রাক কেনা হয়েছে এবং জাতিসংঘের সহায়তায় একটি বৃহৎ গুদাম নির্মাণ করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে জর্ডানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, সশস্ত্র বাহিনী এবং জেএইচসিও তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করেনি।২০২৩ সালের অক্টোবরে যুদ্ধ শুরুর পরপরই জর্ডানে হামাস ও গাজার পক্ষে বিক্ষোভ শুরু হয়। এই চাপের প্রেক্ষিতে যুদ্ধ শুরুর এক মাস পর জর্ডান সামরিক বাহিনীর মাধ্যমে বিমান থেকে ত্রাণ ফেলার কার্যক্রম শুরু করে। এখন পর্যন্ত দেশটি প্রায় ৪০০টি এয়ারড্রপ পরিচালনা করেছে, যার অনেকগুলো অন্যান্য দেশের সহায়তায় সম্পন্ন হয়েছে।
তবে গাজা বাসিন্দা ও মানবিক কর্মীরা এই এয়ারড্রপ কার্যক্রমের সমালোচনা করেছেন। তাদের মতে, এয়ারড্রপ ঝুঁকিপূর্ণ, অপ্রতুল এবং অপ্রয়োজনীয়। স্থলপথে ত্রাণ পাঠানো অনেক বেশি কার্যকর এবং নিরাপদ।
জর্ডান দাবি করেছে, যুদ্ধ শুরুর পর থেকে তারা স্থলপথে ১৪০টি ত্রাণবহর পাঠিয়েছে। প্রতিটি বহরে ছিল একাধিক ট্রাক। তবে এসব পাঠানোর জন্যও ইসরাইলি অনুমতি ও সমন্বয় প্রয়োজন হয়।
ফিলিস্তিনি কর্মকর্তাদের মতে, যুদ্ধের আগে গাজায় প্রতিদিন ৫০০ ট্রাক ত্রাণ পৌঁছানো জরুরি ছিল। কিন্তু যুদ্ধ শুরুর পর থেকে তা কখনোই পূরণ হয়নি। ফলে গাজার মানবিক সংকট দিন দিন তীব্রতর হচ্ছে
মন্তব্য করুন