কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের কূটনৈতিক সম্পর্কে ফের উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। গত ২২ এপ্রিল সংঘটিত ওই হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন ২৬ জন পর্যটক। এর জেরে ভারত সরকার পাকিস্তানের প্রতি কঠোর কূটনৈতিক অবস্থান গ্রহণ করেছে, যার প্রভাব পড়েছে ক্রীড়াঙ্গনেও।
টাইমস অব ইন্ডিয়া এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, এ পরিস্থিতিতে আগামী সেপ্টেম্বরে ভারতের মাটিতে কিংবা নিরপেক্ষ ভেন্যুতে অনুষ্ঠিতব্য এশিয়া কাপ ক্রিকেট স্থগিত হতে পারে। চলমান উত্তেজনার মধ্যে ভারতের মাটিতে এই টুর্নামেন্ট আয়োজনের সম্ভাবনা একেবারেই ক্ষীণ।
এমনকি নিরপেক্ষ ভেন্যুতেও ভারত-পাকিস্তান মুখোমুখি হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। সম্প্রতি বিসিসিআই সহ-সভাপতি রাজীব শুক্লা স্পষ্ট জানিয়েছেন, “আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে আছি। সরকারের সিদ্ধান্তই আমাদের অবস্থান। পাকিস্তানের বিপক্ষে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ আমরা খেলি না এবং খেলবও না।”
ভারতের এই অবস্থান থেকে সরে আসার কোনো লক্ষণ এখনো দেখা যায়নি। টাইমস অব ইন্ডিয়াকে দেওয়া বিসিসিআই-এর এক কর্মকর্তার ভাষ্যে বলা হয়, “বাংলাদেশ সিরিজের পর এশিয়া কাপ হওয়ার কথা। ভেন্যু এখনো নির্ধারিত হয়নি, তবে পরিস্থিতির দিকে তাকিয়ে মনে হচ্ছে টুর্নামেন্টটি পিছিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ আয়োজনের মতো সময় এখন নয়।”
প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশ সফর নিয়েও সিদ্ধান্তহীনতায় আছে ভারত। সফরে একাধিক ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি খেলার কথা থাকলেও তা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। কারণ, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা মেজর জেনারেল (অব.) এএলএম ফজলুর রহমান ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল দখল নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করায় দেশটিতে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, “সফরটি এখনো সূচিতে আছে, কিন্তু কিছুই চূড়ান্ত হয়নি। রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে সফর বাতিল হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।”
উল্লেখ্য, এশিয়া কাপ ২০২৫ এখনো চূড়ান্ত ভেন্যু পায়নি। ভারত আয়োজক হলেও, পূর্বের মতো এবারও হাইব্রিড মডেলে পাকিস্তানকে হয়তো খেলতে হতে পারে শ্রীলঙ্কা বা সংযুক্ত আরব আমিরাতে। তবে সব কিছু নির্ভর করছে বর্তমান রাজনৈতিক উত্তেজনা এবং নিরাপত্তা পরিস্থিতির ওপর।
শেষ পর্যন্ত যদি টুর্নামেন্ট মাঠে গড়ায়ও, তবু ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ আদৌ হবে কি না—তা নিয়ে এখনো ধোঁয়াশা রয়ে গেছে।
তথ্যসূত্র: এনডিটিভি, টাইমস অব ইন্ডিয়া
মন্তব্য করুন