ইসরাইলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদকে সহযোগিতার অভিযোগে ইরানে মোহসেন লাঙ্গারনেশিন নামের এক ব্যক্তিকে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে। বুধবার (৩০ এপ্রিল) সকালে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।
ইরানের বিচার বিভাগের সংবাদমাধ্যম মিজানের বরাতে জানা যায়, ২০২০ সাল থেকে দুই বছর ধরে লাঙ্গারনেশিন মোসাদের জন্য লজিস্টিক, প্রযুক্তিগত ও অভিযানিক সহায়তা প্রদান করেছিলেন।
২০২২ সালের মে মাসে তেহরানে ইসলামিক রেভুলিউশনারি গার্ডস কোর (আইআরজিসি)-এর কর্নেল সাইয়্যাদ খোদাইয়ের হত্যাকাণ্ডেও তার সম্পৃক্ততার কথা জানিয়েছে ইরান। খোদাই নিজ বাড়িতে ফেরার পথে দুই মোটরসাইকেল আরোহীর গুলিতে নিহত হন। নিউ ইয়র্ক টাইমসের তথ্য অনুযায়ী, এই হত্যার দায় ইসরাইল স্বীকার করে তা যুক্তরাষ্ট্রকে জানিয়েছিল।
মিজান আরও জানায়, খোদাইয়ের গতিবিধি নজরে রাখতে লাঙ্গারনেশিন একটি মোটরসাইকেল ক্রয় করেছিলেন এবং হত্যাকাণ্ডের সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া ইসফাহানে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত একটি শিল্প স্থাপনায় হামলার ক্ষেত্রেও তাকে সহায়তাকারী হিসেবে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
ইরান দাবি করেছে, এসব অভিযানে লাঙ্গারনেশিনের সম্পৃক্ততার পক্ষে পর্যাপ্ত গোয়েন্দা ও প্রযুক্তিগত প্রমাণ রয়েছে এবং তিনি আদালতে নিজের অপরাধ স্বীকার করেছেন।
তবে নরওয়ে-ভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন ইরান হিউম্যান রাইটস (আইএইচআর) প্রধান মাহমুদ আমিরি-মোগাদ্দাম বলেছেন, লাঙ্গারনেশিনকে নির্যাতনের মাধ্যমে স্বীকারোক্তি নেওয়া হয়েছে। এএফপিকে তিনি জানান, “ইরানের ফাঁসির মেশিন এখন আরও দ্রুত চলছে এবং প্রতিদিন আরও বেশি মানুষের প্রাণ নিচ্ছে।”
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আবদুররহমান বোরুমন্দ সেন্টার জানিয়েছে, লাঙ্গারনেশিনের বিচার করেছেন বিচারক আবোলগাসেম সালাভাতি, যিনি মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার জন্য কুখ্যাত এবং যিনি ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছেন। সংগঠনটি দাবি করে, লাঙ্গারনেশিন নিজেকে নির্দোষ বলেছেন এবং অভিযোগ করেছে, তার কাছ থেকে জবানবন্দি আদায় করা হয়েছে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের মাধ্যমে।
তথ্যসূত্র: আলজাজিরা
মন্তব্য করুন