বিদ্যুৎ বিল কমানোর উপায় খুঁজতে গিয়ে অনেকেই মনে করেন, দিনে অন্তত এক ঘণ্টার জন্য ফ্রিজ বন্ধ রাখলে বিল কমবে। তবে আধুনিক রেফ্রিজারেটরের ক্ষেত্রে এই ধারণা একেবারেই ভুল। বরং এতে বিদ্যুৎ খরচ কমার বদলে বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।
সাধারণত, শুধুমাত্র ফ্রিজ পরিষ্কার করার সময় বা কোথাও সরাতে হলে সেটি বন্ধ রাখা যেতে পারে। অন্য সময় ফ্রিজ সবসময় কারেন্টে সংযুক্ত থাকা উচিত। এর কিছু নির্দিষ্ট কারণ রয়েছে—
আধুনিক ফ্রিজে সাধারণত থার্মোস্ট্যাট নামক একটি যন্ত্র থাকে, যা স্বয়ংক্রিয়ভাবে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। ফ্রিজের ভেতর প্রয়োজনীয় ঠান্ডা পৌঁছালে কম্প্রেসর বন্ধ হয়ে যায় এবং ঠান্ডা কমে গেলে তা আবার চালু হয়। তাই আলাদা করে ফ্রিজ বন্ধ করার দরকার পড়ে না।
ফ্রিজ বারবার চালু ও বন্ধ করলে কম্প্রেসরকে ঘন ঘন কাজ শুরু করতে হয়, যা একটানা চালু থাকার তুলনায় বেশি বিদ্যুৎ খরচ করে। এর ফলে বিদ্যুৎ বিল কমার বদলে সামান্য হলেও বেড়ে যেতে পারে।
দিনের কোনো এক সময়ে ফ্রিজ বন্ধ রাখলে এর অভ্যন্তরের তাপমাত্রা বাড়তে পারে, ফলে রাখা খাবার নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকে। খাবার দীর্ঘসময় ভালো রাখতে ফ্রিজের অভ্যন্তরের তাপমাত্রা স্থিতিশীল রাখা অত্যন্ত জরুরি।
ঘন ঘন ফ্রিজ চালু ও বন্ধ করার ফলে কম্প্রেসরের ওপর চাপ পড়ে। এতে যন্ত্রটির আয়ু কমে যেতে পারে। যেহেতু কম্প্রেসর নিজেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে চলে, তাই সেটিকে বারবার হস্তক্ষেপ করে বন্ধ-চালু করাটা উল্টো ক্ষতি ডেকে আনতে পারে।
ফ্রিজ বন্ধ থাকলে ভেতরে আর্দ্রতা জমে ছত্রাক তৈরি হতে পারে। যদি পরিষ্কার না করে ফ্রিজ বন্ধ রাখা হয়, তবে এতে ব্যাকটেরিয়া জন্ম নিতে পারে, যা খাবার নষ্ট করার ঝুঁকি বাড়ায়।বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের জন্য ফ্রিজ বন্ধ রাখা কার্যকর কোনও উপায় নয়। বরং এটি ফ্রিজের কার্যকারিতা ও স্থায়িত্বে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে। সঠিক ব্যবহারে ফ্রিজ নিজেই প্রয়োজন অনুযায়ী চালু ও বন্ধ হয়ে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে সাহায্য করে।
মন্তব্য করুন