প্রতি বছর ঈদে মুক্তি পাওয়া সিনেমাগুলো সাধারণত দর্শকদের প্রেক্ষাগৃহে নিয়ে আসে। সেগুলোর মধ্যে বড় তারকা ও বড় আয়োজনের সিনেমাগুলো থাকে, যা দর্শকদের আগ্রহ বাড়ায়। তবে ঈদের পর এই সিনেমাগুলো ধীরে ধীরে হারিয়ে যায় এবং প্রেক্ষাগৃহ আবারও দর্শকশূন্য হয়ে যায়।
ঈদের পর সিনেমাগুলোর সাফল্য ধীরে ধীরে কমে যায় এবং দীর্ঘ সময় পরবর্তী সিনেমাগুলোর অভাব অনুভূত হয়। বছরজুড়ে দর্শকদের অভাব দেখা দেয়, এবং অনেক প্রেক্ষাগৃহ বছরে একমাত্র ঈদেই খোলা থাকে। এই বাস্তবতা নির্মাতা, প্রযোজক ও পরিচালকদের জন্য এক কঠিন সমস্যা তৈরি করেছে।
বেশ কিছু কারণের জন্য ঈদ ছাড়া বড় সিনেমা মুক্তি দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না:
তারকা চাহিদা কম: বর্তমানে, দর্শকদের কাছে একমাত্র তারকা শাকিব খান, যিনি ঈদ ছাড়া তেমন কোন ভালো ফলাফল এনে দিতে পারেন না।
লগ্নি ফেরানোর চিন্তা: বড় বাজেটের সিনেমা নির্মাণে প্রযোজকরা ঈদে মুক্তি দেওয়ার সময়েই লগ্নি ফেরানোর নিশ্চয়তা পান। ঈদের বাইরে সিনেমার সাফল্যের গ্যারান্টি নেই, তাই তারা ঝুঁকি নিতে চান না।
বর্তমানে সিনেমার প্রেক্ষাগৃহের সংখ্যা কমে গিয়ে ১,৫০০ থেকে ৫০-তে নেমে এসেছে। অনেক প্রেক্ষাগৃহ বছরের বেশিরভাগ সময় বন্ধ থাকে এবং শুধুমাত্র ঈদে খোলা হয়।
নির্ভরশীলতা বিদেশি সিনেমার উপর: সিনেপ্লেক্সগুলো এখন বিদেশি সিনেমার উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে, কারণ স্থানীয় সিনেমাগুলো ব্যবসায়িকভাবে সফল হচ্ছে না।
দর্শক চাহিদাসম্পন্ন শিল্পীর অভাব রয়েছে। একসময় নায়ক-নায়িকার নামের উপর দর্শক প্রেক্ষাগৃহে আসতেন, কিন্তু বর্তমানে সেই চিত্র প্রায় নেই। আজকালকার দর্শকদের মধ্যে একই আগ্রহ আর নেই, ফলে প্রযোজকরা শুধু ঈদকেই লক্ষ্য করে সিনেমা মুক্তি দিচ্ছেন, যেখানে কিছু লাভও উঠে আসে।
শাকিব খান বর্তমানে একমাত্র ব্যস্ত নায়ক, যার সিনেমা ঈদ ছাড়া মুক্তি পায় না। যদিও তার সিনেমাগুলো সাধারণত ঈদের পর তেমন সফলতা পায় না। গত বছরের শেষের দিকে মুক্তি পাওয়া ‘দরদ’ সিনেমাটি তার ঈদ ছাড়া মুক্তি পেয়েছিল, কিন্তু সাফল্য পায়নি।
ঈদ ছাড়া সিনেমা মুক্তি: ঈদ ছাড়া বড় তারকা ও ভাল সিনেমার মুক্তির ব্যবস্থা করা।
নতুন শিল্পীদের উন্নয়ন: দর্শকদের চাহিদাসম্পন্ন শিল্পী তৈরি করা যাতে দর্শক সবসময় প্রেক্ষাগৃহে আসেন।
বিনিয়োগের নিরাপত্তা: প্রযোজকদের জন্য নির্দিষ্ট সময়ের বাইরে সিনেমার ব্যবসায়িক সাফল্যের নিশ্চয়তা তৈরি করা।
এই পরিস্থিতি ঢালিউড ইন্ডাস্ট্রির জন্য চ্যালেঞ্জ, তবে শর্ত সাপেক্ষে যদি সঠিক পরিকল্পনা নেয়া যায়, তাহলে ভবিষ্যতে ইন্ডাস্ট্রি আবার সাফল্য ফিরে পেতে পারে।
মন্তব্য করুন