দখলকৃত পূর্ব জেরুজালেমে অবস্থিত মুসলিমদের তৃতীয় পবিত্র স্থান আল-আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণে আবারও হামলা চালিয়েছে শত শত অবৈধ ইহুদি বসতি স্থাপনকারী। সোমবার (১৪ এপ্রিল) ইহুদি ধর্মীয় উৎসব পাসওভারের দ্বিতীয় দিন উপলক্ষে এই হামলা সংঘটিত হয়।
জেরুজালেমের ইসলামিক ওয়াকফ বিভাগ এক বিবৃতিতে জানায়, ইসরাইলি পুলিশের সহায়তায় ৭৬৫ জন অবৈধ বসতি স্থাপনকারী আল-মুগাররাবা গেট দিয়ে প্রবেশ করে আল-আকসা প্রাঙ্গণে। তারা দলবদ্ধ হয়ে মসজিদের বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নেয় ও উগ্র আচরণ করে।
এর আগের দিন, পাসওভারের প্রথম দিনেও প্রায় ৫০০ জন ইহুদি অবৈধভাবে প্রবেশ করে একই ধরনের কর্মকাণ্ড চালায়।
পাসওভার (Passover) ইহুদি ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব। এটি নবী মূসা (আ.)-এর নেতৃত্বে মিসর থেকে ইহুদি জনগণের নির্গমনের স্মরণে পালিত হয়।
ফিলিস্তিনি ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, চলতি রমজান মাসে (মার্চ-এপ্রিল ২০২৫) ২১ বার আল-আকসা মসজিদে অবৈধভাবে প্রবেশ করে হামলা চালানো হয়েছে।
অন্যদিকে জেরুজালেম গভর্নর অফিস জানায়, ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত তিন মাসে ১৩,০৬৪ জন ইসরাইলি চরমপন্থি মসজিদটিতে ঢুকে উস্কানিমূলক তৎপরতায় জড়িত ছিল।
আল-আকসা মসজিদ ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের কাছে তৃতীয় পবিত্রতম স্থান। অন্যদিকে ইহুদি ধর্মাবলম্বীরা একে “টেম্পল মাউন্ট” হিসেবে দাবি করে, যেখানে তারা তাদের প্রাচীন উপাসনালয় থাকার কথা বলে
জেরুজালেম বিষয়ক বিশ্লেষক ফাখরি আবু দিয়াব বলেন, “চরমপন্থি ইহুদি গোষ্ঠীগুলো পাসওভার ছুটিকে কাজে লাগিয়ে আল-আকসায় হামলা বাড়িয়ে দিয়েছে। তারা ডোম অব দ্য রক-এর নিকটবর্তী এলাকায় তালমুদি অনুষ্ঠান ও দুম্বা জবাইয়ের চেষ্টা করছে।”
তিনি এটিকে ‘আল-আকসা মসজিদের পরিকল্পিত ইহুদিকরণ’ হিসেবে অভিহিত করেন এবং বলেন, “ইসরাইলি পুলিশ ও চরমপন্থি মন্ত্রিসভার পূর্ণ সমর্থনে এসব হামলা চালানো হচ্ছে।”
আন্তর্জাতিকভাবে পূর্ব জেরুজালেমে ইসরাইলি নিয়ন্ত্রণ কখনো স্বীকৃতি পায়নি। ১৯৬৭ সালের আরব-ইসরাইল যুদ্ধের পর ইসরাইল পূর্ব জেরুজালেম দখল করে নেয় এবং ১৯৮০ সালে একে নিজেদের রাজধানীর অংশ ঘোষণা করে। তবে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় তা কখনোই স্বীকৃতি দেয়নি।
মন্তব্য করুন