“মা, ক্ষমা করে দিও” মানুষকে সাহায্য করার এই পথ আমি বেছে নিয়েছি.. সেনাবাহিনী চলে এসেছে..” — এগুলোই ছিল ফিলিস্তিনি প্যারামেডিক রিফাত রাদওয়ানের শেষ কথা। ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় আহত অবস্থায় অ্যাম্বুলেন্সে বসে মায়ের সঙ্গে ফোনে এই কথাগুলো বলেছিলেন তিনি। এখন সেই কথাগুলো তার মায়ের বুকে শেলের মতো বিঁধছে।
রাদওয়ান ছিলেন গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত ১৪ ফিলিস্তিনি প্যারামেডিকের একজন। গত ২৩ মার্চ রাতে রাফার তেল আল-সুলতান এলাকায় সাহায্যের আবেদন পেয়ে রেড ক্রিসেন্টের সদস্যরা রওনা দিলে ইসরায়েলি বাহিনী তাদের অ্যাম্বুলেন্স থামায়। এরপর থেকেই তাদের খোঁজ মেলেনি। পরে একটি গণকবরে তাদের মরদেহ পাওয়া যায়।
রাদওয়ানের মরদেহের সঙ্গে পাওয়া যায় তার মোবাইল ফোন। সেখানে প্যালেস্টিনিয়ান রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি ৬ মিনিট ৪২ সেকেন্ডের একটি ভিডিও পায়, যা শনিবার (৫ এপ্রিল) প্রকাশ করা হয়। ভিডিওটিতে বন্দুকের গুলির শব্দ, আহতদের চিৎকার ও কালিমা পাঠের আওয়াজ শোনা যায়। নিউইয়র্ক টাইমস ভিডিওটি শেয়ার করলে তা মুহূর্তে ভাইরাল হয়।
ভিডিও থেকে জানা যায়, ইসরায়েলি সেনারা ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর পরও কিছু প্যারামেডিক বেঁচে ছিলেন, কিন্তু তাদের কোনো সাহায্য করা হয়নি। ইসরায়েলি বাহিনী প্রথমে দাবি করেছিল, অ্যাম্বুলেন্সে ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা ছিল, কিন্তু পরে প্রমাণিত হয় সেখানে শুধু চিকিৎসাকর্মীরাই ছিলেন।
এই হত্যাকাণ্ডের ভিডিও প্রকাশের পর বিশ্বজুড়ে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা ওঠে। মানবাধিকার সংগঠনগুলো এই হামলাকে যুদ্ধাপরাধ হিসেবে অভিহিত করে বিচার দাবি করেছে।
রাদওয়ানের মতো প্যারামেডিকরা শুধু জীবন বাঁচাতে গিয়েই নিজের জীবন দিলেন, কিন্তু তাদের শেষ কথাগুলো এখন বিশ্ববাসীর বিবেককে নাড়া দিচ্ছে।
মন্তব্য করুন